চট্টগ্রাম ব্যুরো :
চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২৫ জন প্রার্থী।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন
এবারের নির্বাচনে জেলায় মোট ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৯৯৫ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ।চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরই মধ্যে সব কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ভোটের সরঞ্জামসহ ব্যালট পেপার। নির্বাচনী সহিংসতা এড়াতে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আশা করছি কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।
তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি টহলে থাকবে র্যাবের টহল টিম। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।
চট্টগ্রাম ১৬ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ২ হাজার ২৩টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ৬টি আসনে রয়েছে ৬৬০টি কেন্দ্র ও উপজেলার ১০টি আসনে রয়েছে ১ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্র। মোট ভোটার সংখ্যা ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৯৯৫ জন। এর মধ্যে ৩২ লাখ ৮২ হাজার ২৫৫ জন পুরুষ ও ৩০ লাখ ২৪ হাজার ৬৮৪ জন নারী।
মোট ভোটারের মধ্যে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬৪ জন, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৭ জন, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) ২ লাখ ৪১ হাজার ৯০৭ জন, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) চার লাখ ২৭ হাজার ১৭২ জন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫৫ জন, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯২০ জন, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) ৩ লাখ ৩১ হাজার ৯১ জন, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪৭৩ জন, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) ৪ লাখ ৯ হাজার ৫৭৬ জন, চট্টগ্রাম-১০ (খুলশি, পাহাড়তলী, হালিশহর) ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯৯০ জন, চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা, বন্দর) ৫ লাখ ১ হাজার ৮৪৮ জন, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) ৩ লাখ ২৯ হাজার ৪২৮ জন, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৪ জন, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) ২ লাখ ৮৮ হাজার ১২২ জন, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া) ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৪০৩ জন, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯৫ জন।
উল্লেখ্য, ইসির দেওয়া তথ্যমতে, নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার আনসার, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ, ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি, দুই হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড এবং ৭০০ এর বেশি র্যাব টহলে থাকবে। তাদের সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরাও মাঠে থাকবে। প্রতিকেন্দ্রে থাকবেন ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য।
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।
এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হবে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।
এদিকে, বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবোরধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।