আবদুল হাকিম রানা, পটিয়া
দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের উপকেন্দ্র চালু হয়েছে। পটিয়া পৌর মাল্টিপারপাস কিচেন মার্কেটের ৩য় তলায় এই চক্ষু হাসপাতালের উপকেন্দ্রটি গত ৩০ জুলাই উদ্বোধন করা হলেও পয়লা আগস্টে শোকের মাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রথম দিন থেকে রোগী দেখার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।
প্রথমদিনে অর্ধশতাধিক রোগী তাদের চোখ পরীক্ষাসহ নানান চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। চিকিৎসাসেবার কাজ শুরুর প্রাক্কালে এ চক্ষু হাসপাতাল উপকেন্দ্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, পটিয়া পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আইয়ুব বাবুল হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসক ও রোগীদের সাথে কথা বলেন। ডাক্তারগণ তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোগীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানের বিষয়ে মেয়র আইয়ুব বাবুলকে আশ্বস্থ করেন।
মেয়র পরে চিকিৎসাসেবা নিতপ আসা রোগীদের সাথে কথা বলেন। তিনি রোগীদের উদ্দেশ্য বলেন, এ চক্ষু হাসপাতালে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। আপাতত চক্ষু পরীক্ষাসহ যাবতীয় ট্রিটমেন্ট চলবে। শীঘ্রই দেশের প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা: রবিউল ইসলামের দেওয়া কথা মোতাবেক এখানে অপারেশন থিয়েটার স্থাপিত হলে রোগীদের অপারেশনসহ পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হবে। তিনি বলেন, এ হাসপাতালে শুধু পটিয়া নয়,
দক্ষিণ চট্রগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের সেবা নিশ্চিত করা হবে। তিনি সবাইকে এ হাসপাতালের সেবা গ্রহনের আহবান জানান।
এসময় রোগীরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দোরগোড়ায় এ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা শুরু হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল এ ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ সময় হাসপাতালের প্রতিনিধি শহীদ ফারুকী, সমাজ হিতৈষী আবদুল লতিফসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩০ জুলাই এ হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চক্ষু চিকিৎসাসেবা ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন। তিনি বলেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠি এখনো চক্ষু চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। নগর থেকে গ্রামঞ্চলে মানসম্মত উন্নত চক্ষু চিকিৎসাসেবার পরিধি বৃদ্ধিতে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল একের পর এক সেবামূখী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সেবা পাওয়ার মনোভাব নিয়ে এতদঞ্চলে এই ভিশন সেন্টার চালু হয়েছে। জনগণের দোড়গড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে মিরসরাই, ফেনী, কক্সবাজারের ঈদগাঁও এবং পটিয়াসহ কয়েকটি স্থানে ভিশন সেন্টার চালু করা হয়েছে । বিশেষ করে শহরের নিকটস্থ পটিয়া পৌরসভায় এ সেবা কেন্দ্র চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ তাদের দোরগোড়ায় সহজেই সেবা পাওয়ার অবারিত সম্ভাবনা বাস্তবতার আলো দেখবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৩৫ ভাগ শিশু। তাদের জন্য স্পেশাল কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই এই উপ-কেন্দ্রে সেবার পাশাপাশি আরো একটা সেবা চালু থাকবে। সেটা হচ্ছে শিশুদের চক্ষু চিকিৎসা। যত ভিশন সেন্টার করেছি পটিয়ায় এটা সবচেয়ে উন্নতমানের। আপনারা পাশে থাকবেন, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এখানে সেবা দেয়া সম্ভব হবে না ।
চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ওসমানীর উপস্থাপনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ আহমেদ আল কাদেরী।
বক্তব্য রাখেন, অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. আনানথ এন রাও, চক্ষু হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. রাজীব হোসেন, রোটারী ক্লাব অব চিটাগাং খুলশী সেন্ট্রালের চার্টার প্রেসিডেন্ট মো. রিজোয়ান শাহিদী, প্রফেসর আবদুল আলিম, পৌরসভায় কাউন্সিলর গোফরান রানা ও সফিউল আলম।
এইচ এম কাদের, সিএনএন বাংলা ২৪