
নিজস্ব প্রতিবেদক
ডেঙ্গুসহ ভেক্টর বাহিত রোগ কমাতে বছরব্যাপী পরিকল্পনা আর সরকারি-বেসরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার (২ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও বিশ্বব্যাংকের যৌথভাবে আয়োজিত ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট ও নলেজ শেয়ারিং বিষয়ক কর্মশালায় এ দাবি জানান তিনি।
মেয়র বলেন, ডেঙ্গুসহ ভেক্টর বাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো ৪ থেকে ৫ মাসের বিচ্ছিন্ন কার্যক্রমের পরিবর্তে বছরব্যাপী কর্মসূচির পরিকল্পনা করা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যক্রমের সমন্বয়। একটি সরকারি সংস্থা থাকা উচিত যা কার্যকর কীটনাশক এবং এডিস ও অন্যান্য ভেক্টরের জৈবিক নিয়ন্ত্রণের ওপর গবেষণা চালাবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে দাবি করে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে আমি সবচেয়ে জোর দিচ্ছি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে। স্থানীয় পত্রিকায় সচেতনতামূলক ও সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি কয়েকদিন পর পর প্রচার করা হচ্ছে। রেডক্রিসেন্ট ও আরবান ভলান্টিয়ারের যৌথ টিমের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ও নগরের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রতিদিন লিফলেট বিতরণ ও হ্যান্ড মাইক ব্যবহার করে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানা হচ্ছে। বাজানো হচ্ছে আঞ্চলিক ভাষায় সচেতনতামূলক গান। এছাড়া ৫টি মাইকের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
উৎস থেকে মশা নিয়ন্ত্রণে গৃহিত পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ড্রোন ব্যবহার করে যেখানে পানি জমে আছে এবং লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে জরিমানা করা হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পানি জমে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের নতুন সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. ইব্রাহিম। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এজেন্সির একটি প্রতিনিধিদল ডেঙ্গুসহ ভেক্টর বাহিত রোগ প্রতিরোধে সিঙ্গাপুরের সাফল্যের কারণ এবং তা অনুসরণ করে বাংলাদেশ কীভাবে লাভবান হতে পারে তা তুলে ধরেন।
সভায় চসিকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেন রানা, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি।
ভেক্টর বাহিত রোগ বলতে সেসব রোগকে বোঝায় যেগুলো কোনো জীবিত বাহকের মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হয়। সেটা মানব দেহ থেকে মানব দেহ হতে পারে, বা কোনো জীবজন্তু থেকে মানব দেহ হতে পারে। ডেঙ্গু একটি ভেক্টর বাহিত রোগ। এই রোগ এডিস ইজিপ্ট মশার মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে অপর জনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে।