নিজস্ব প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ
বর্ষার পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নাটেশ্বর গ্রামের ১১টি পরিবার। এ কারণে তাদের চলাচল করতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই নিজেদের অর্থায়নে ৮০০ ফিট বাঁশের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন এলাকাবাসী।
পরিবারগুলো বংশপরম্পরায় কয়েকশত বছর ধরে নৌকা দিয়ে ওই ৮০০ ফিট রাস্তা বর্ষায় যাতায়াত করে আসছে। এ বছর বর্ষার শুরুতেই ওই ১১পরিবার ওই স্থানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ শুরু করেছে।
গত সোমবার এ সাঁকো নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই সাঁকো নির্মাণ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সাঁকো নির্মাণের উদ্যোক্তা নিশি ব্যাপারী।
সরেজমিনে বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ দিয়ে ওই বিশাল সাঁকো নির্মাণ করছে ৪ জন শ্রমিক। বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার মধ্যে বাঁশ দড়ি দিয়ে বেঁধে এ নির্মাণ কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বাঁশের খুঁটি পোতা শেষ হয়েছে। খুঁটির সঙ্গে বাঁশ বাঁধার কাজ চলছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, আমাদের বাড়ি থেকে প্রধান সড়কের দূরত্ব ৮০০ ফুট। শীত মৌসুমে আমরা পায়ে হেঁটে এ রাস্তায় যাতায়াত করি। কিন্তু বর্ষা আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যাতায়াতের রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। জন্মের পর থেকে আমরা নৌকা দিয়ে এ স্থান পারাপার হয়ে আসছি। আমাদের পূর্ব পুরুষরাও নৌকা দিয়ে পারাপার হতো। এবার বর্ষা আসার শুরুতে ওই ৮০০ ফিট রাস্তার অনেকাংশ পানিতে তলিয়ে গেছে।
প্রতিদিন রাস্তার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে সাঁকো নির্মাণ না করলে আমাদের বাড়ি হতে কয়দিনের মধ্যে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দ্রুত সাঁকো নির্মাণ করছি। সরকারতো আমাদের দুর্ভোগের জন্য কিছু করবে না তাই দুর্ভোগ লাঘবে সরকারি সহায়তা ছাড়াই নিজস্ব অর্থায়নে সাঁকো নির্মাণ করছি।
এ ব্যাপারে ওই সাঁকো নির্মাণের উদ্যোক্তা আব্দুর রব বেপারীর ছেলে নিশি ব্যাপারী বলেন, আমার বয়স ৩৮ বছর। জন্মের পর থেকে আমরা নৌকা দিয়ে এই ৮০০ ফুট রাস্তা পারাপার হচ্ছি। আমার পূর্ব পুরুষরাও নৌকা দিয়েই এই রাস্তা পারাপার হতো। আমাদের গ্রামের আমার পরিবার ছাড়াও আরিফ ব্যাপারী, উজ্জ্বল বেপারী, সিরাজ ব্যাপারী, সেলিম শেখ, সলিম মোল্লা, মনির সেখসহ ১১টি পরিবারের লোকজনসহ পাশের বাড়ির লোকজনও এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। এ বছর বন্যা হচ্ছে। সব জায়গায় পানি বাড়ছে। আমাদের রাস্তায় পানি উঠে গেছে। আমাদের নিজেদের অর্থায়নে আমরা নিজেরাই সাঁকো নির্মাণ করছি।সরকারি কোনো অর্থায়ন নাই। সাঁকোটি ৮০০ ফিট । রাস্তাটি নির্মাণে বাঁশ কিনা শ্রমিকসহ ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে। ৩ দিন ধরে কাজ চলছে। ৪ জন লোক কাজ করছে।
এ ব্যাপারে সোনারং টঙ্গিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আলি ফকির সিএনএন বাংলা২৪কে বলেন, ওই স্থান দিয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ওই স্থানের কিছু রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি রাস্তা নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। তবে ওই স্থানে এ বছর সাঁকো নির্মাণ করছে এলাকাবাসী। বিষয়টি আমি জানি। আমি বাঁশের সাঁকো নির্মাণের জন্য সরকারি ও ইউনিয়ন পরিষদ হতে বরাদ্দ চেয়েছিলাম। কিন্তু বরাদ্দ চেয়ে পাওয়া যায়নি।