নিজস্ব প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পুকুরিয়ার সামছেল মোল্যা হত্যাকান্ডে নতুন মোড়। ১৫ লাখ টাকায় সামছেল হত্যাকান্ডের ঘটনা হজম করার ব্যর্থ চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা লুট করতেই ছেলে ধরার নাটক সাজিয়ে কুপিয়ে, খুচিয়ে হত্যা করা হয় ৪ সন্তানের এই জনককে। শেষ পর্যন্ত ফাঁস হলো কথিত ছেলে ধরার নামে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার সাজানো নাটকও।
আসল রহস্য ফাঁস করলেন নিহতের স্ত্রী ঝর্না বেগম। তিনি গনমাধ্যমকর্মীদের সামনে এক মানববন্ধনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীর ঘনিষ্ট বন্ধু পাভেল মীরের সাথে জমি বিক্রির টাকা কোমরে গুঁজে নিয়ে বের হওয়াটাই স্বামীর কাল হলো।
জমির বিক্রির এককালীন এতগুলো টাকা পাওয়ায় সামছেলের বন্ধু পাভেল, তার ভাই আবুবকর মীরসহ কয়েকজন মিষ্টি খাবার ছলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই টাকাসহ পুকুরিয়া পেট্রোল পাম্পের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে ওই টাকা লুট করতে গিয়ে ছেলে ধরার নাটক সাজানো হয়।
স্বামীর উপর অনেক অত্যাচারের পর ধারালো অস্ত্রের আাঘাতে ক্ষবিক্ষত করা হয় সামছেল মোল্যাকে। জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পুকুরিয়া বাসস্টেশনের কিরন শীলের সেলুনে ঢুকলেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। এর মধ্যেই ১৪-১৫ জন লোক সেলুনের ক্ষুর ও কাঁচি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আঘাত করে। পরে সব টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে সামছেলকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। গত ১৬ এপ্রিল হত্যাকান্ডটি ঘটে।
সামছেল মোল্যার স্ত্রীর দাবি করে বলেন- আমি, আমার শাশুড়ি, আমার ছোট সতীন বহুবার থানায় গেলেও ওসি মাতুব্বরদের মাধ্যমে ছেলে ধরার ঘটনায় গণপিটুনিতে স্বামী নিহত হওয়ার ঘটনা মিটমাট করে ফেলতে বলেন। আমি যাদের নামে এজাহার দিয়েছি, ওসি সেই মামলা নেননি। পরপর ৩-৪ দিন ঘুরলেও থানায় মামলা নেয়নি বলে ঝর্নার অভিযোগ।
পরে ঘটনার ৬ দিন পর ভাঙ্গা থানার পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০০-১২০ জনকে আসামি দেখিয়ে একটি মামলা করেন (নং ৪০/১৩৮)। পাশাপাশি নিহতের বড় স্ত্রী ঝর্না বেগম বাদী হয়ে ফরিদপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৭ জনকে আসামি করে একটি নালিশি আবেদন করেন। আদালত বিষয়টি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
এবিষয়ে ভাঙ্গা থানার মামলার বাদী এসআই অপূর্ব কুমার বাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার একজন আসামি আটক হয়েছে। নিহত ব্যক্তির কিছু টাকাও উদ্বার হয়েছে। জানা গেছে, উদ্ধার ওই টাকা জব্দ দেখানো হয়নি।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, যেহেতু নিহতের দুই বউ এবং মা আছেন, কেউ থানায় মামলা দেননি। তাদের বহু অনুরোধ করেছি, মামলা করতে। তারা মামলা দেয়নি বিধায়, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
এইচ এম কাদের, সিএনএন বাংলা২৪