এস.এম.জয়,বগুড়া:
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যানজট নিয়ন্ত্রণে আগামী শনিবার থেকে, বগুড়া শহরে ইজিবাইক এবং মোটা চাকার অটোরিক্সা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মাইকিং এর মাধ্যমে আগাম প্রচার করা হবে। শুধু এই নিষেধাজ্ঞায় নয় বগুড়া শহরের অনিয়ন্ত্রিত এই যানজট নিরসনে ঈদের আগে আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ।
বুধবার সকালে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে, শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে অনুষ্ঠিত জেলা পুলিশের মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা দেয়া হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম পিপিএম। এসময় পুলিশ সুপার বলেন, উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় বগুড়াকে। ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার ১২টি উপজেলার মানুষই শুধু নয় আশেপাশের কয়েক জেলার মানুষ এই শহরে আসে ঈদের কেনাকাটা থেকে শুরু করে নানা প্রয়োজনে। অতিরিক্ত মানুষ এবং যানবাহনের চাপে সড়কে সৃষ্টি হয় মাত্রাতিরিক্ত যানজটের যা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক বিভাগকে। তবে প্রতিবছর এই সময়ে নানামুখী ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়ার ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে সড়কে তাই এবার আগে থেকেই সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে এই সমস্যা মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে হবে। যানজট নিরসনে সত্যিকার অর্থে জেলা পুলিশের আন্তরিকতার কোন অভাব নেই তবে আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলকে, জনপ্রতিনিধিদের এবং সাধারণ মানুষদেরও। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে এবার জেলা পুলিশ যানজট নিরসনে সড়কে কঠোর অবস্থায় থাকবে মর্মে জানান জেলা পুলিশের এই কর্ণধার।
সভায় ঈদের আগে যানজট নিরসনে করণীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মোতাহার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার, বগুড়া জেলা বাস, মিনিবাস,কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি শাহ মো: আখতারুজ্জামান ডিউক, কার্যকরী সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হামিদ মিটুল, বগুড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরুণ কুমার চক্রবর্তী, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল করিম ডাবলু প্রমুখ।
সকলের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে আগামী শনিবার থেকে শহরের অভ্যন্তরে ইজিবাইক এবং মোটা চাকার অটোরিকশা প্রবেশ করবে না এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাদের শেষ সীমানা হবে দত্তবাড়ি মোড়, পিটিআই মোড়, সেউজগাড়ি ও জেলখানা মোড়।
এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আপাদত ঈদ পর্যন্ত আর কেউ আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয় সভায়। এছাড়াও সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তসমূহ হলো, সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরে বড় বাস প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, শহরের স্টেশন রোডের ফলপট্টিকে অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা এবং সিএনজিগুলো এক লাইনে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ, বড়গোলা থেকে কাঠালতলা পর্যন্ত রাস্তার সংস্কারকাজ সম্পন্ন হলে এই রাস্তাটি সম্পূর্ণ একমুখী করা, শহরে ভারী যানবাহন/ট্রাক প্রবেশ রোধে চারমাথা ও আজিজুল হক কলেজের সামনে ট্রাফিক ডিউটি বাড়িয়ে অবাধ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা এবং জলেশ্বরীতলা কালীমন্দির সংলগ্ন দুটি রাস্তা একমুখী করার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও যানজট নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের সদস্যদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও সড়কে দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে জানানো হয় সভায়।
সর্বোপরি বগুড়ার সকল মহলের মানুষকে যানজট নিরসনে সচেতন ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয় জেলা পুলিশের পক্ষে।