ঈদগাঁও প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে রাতের আধারে প্রায় ২০ কানি মাঠের পলিথিন কেটে লবণ ও সেলু মেশিন লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে লবণ উৎপাদনের ভর মৌসুমে লাখ টাকার পলিথিন কেটে ফেলায় চরম দিশেহারা হয়ে পড়েছে ঐ লবণ চাষী। জমি বিরোধের জের ধরে এমনতর ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
যে সময়ে লবণের মূল্যে, দাদন ব্যবসায়িদের টাকা শোধ করার জন্য লবণ উৎপাদনে যুদ্ধ নেমেছে চাষীরা। এমনতর সময়ে মাঠের পলিথিন কেটে দিয়ে লবণ লুট করেছে একদল দুর্বত্ত। এতে ঐ লবণ চাষীদের অনুমানিক ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
শনিবার (১৬ মার্চ) মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি মৌজার কেরানিঘোনাস্থ লবণ মাঠে।
ক্ষতিগ্রস্ত লবণ মাঠের চাষিরা হলেন উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্ব নয়া পাড়ার এখলাছ, আবুল হাসিমের ৬ কানির ১ লাখ, একই এলাকার মোঃ নছিরের ৮ কানি ২ লাখ ৫০ হাজার ও ফুলছড়ি কচিকাটা গ্রামের আবুল হোসাইনের ৬ কানি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাদের ২০ কানি মাঠের পলিথিন কেটে লবণ উৎপাদন ব্যাহত করেছে দুর্বৃত্তরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঔ ঘোনার জমির মালিক
নুরুল আলমের প্রায় ৬ কানি লবণ মাঠের চাষা হিসাবে রয়েছে স্থানীয় আবুল হোসেন। চলতি মৌসুমে তারা ওই মাঠে লবণ চাষ করে আসছেন। ঘটনার আগের দিন রাতে তারা মাঠের কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে যান।
শনিবার সকালে এসে দেখতে পান একদল দুর্বৃত্ত ৬ কানি লবণ মাঠের সম্পুর্ন পলিথিন কেটে ‘অর্ধ ফুটন্ত’ লবণ নষ্ট করে ফেলে এবং লবণ, পলিথিন ও মেশিন লুট করে নিয়ে গেছে। তারা এ অবস্থা দেখে হতবিহব্বল হয়ে জমির মালিককে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত লবণ মাঠে যান জমির মালিক নুরুল আলমের স্ত্রী মোছাম্মৎ তহমিনা।
তিনি বলেন, তার সাথে কারো শত্রূতা নেই। তবে স্থানীয় ছৈয়দ আলম, রুহুল আমিন, সরওয়ারের সাথে এ জমির বিরোধ চলে আসছিল। তারা মোটা অংকের চাঁদা দাবী করেন। থানা-আদালতে মামলা-অভিযোগ দেয়ার পরও চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হলে ঐ গং ক্ষুব্ধ হয়ে নানাভাবে ক্ষতি করে হুমকি অব্যাহত রেখেছে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার ভোর রাতে কেরানিঘোনায় আমার ৬ কানি লবণ মাঠের পলিথিন কেটে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। লুট করে নিয়ে গেছে লবণ,পলিথিন ও মেশিন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ প্রক্রিয়াধিন বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে ঐ লবণ মাঠের মালিক সাবেক মেম্বার আকতার আহমদ বলেন, রাতের অন্ধকারে আমার প্রায় ৮কানি মাঠের পলিথিন কেটে লবণ লুট করে নিয়ে গেছে। মাঠের বাঁধ (আইল) কেটে পানি ছেড়ে দিয়ে প্রায় ২শ মন লবণ নষ্ট করে আমাকে পথে বসিয়েছে।
ঔ ঘোনায় চলতি মৌসুমে ৬ কানি লবণ মাঠে চাষ করছেন রফিকুল ইসলাম হেলালী। তার নিয়োগকৃত চাষা এখলাছ, আবুল হাসিম। গতকাল সন্ধ্যায় মাঠের কাজ শেষ করে তারা বাসায় ফিরে যান। শনিবার সকালে এসে দেখতে পায় দুর্বৃত্তরা সম্পুর্ণ লবণ মাঠের পলিথিন লুট করে ‘অর্ধ ফুটন্ত’ লবণ নষ্ট করে ফেলেছে। তাৎক্ষনিক বিষয়টি রফিকুল ইসলাম হেলালিকে জানালে তিনি লবণ মাঠের অবস্থা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এসময় লবণ চাষী এখলাছ বলেন, আমি সামান্য লবণ মাঠ করে সংসার চালায়। কারো সাথে শত্রূতা নেই। কেন কি কারনে আমার মাঠের পলিথিন কেটে ফেলেছে আমার বুঝে আসছে না। থানায় লিখিত অভিযোগ প্রক্রিয়াধিন জানিয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি, পেলে পরবর্তীতে গুরুত্বসহকারে ছাপানো হবে।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল আজিম মাঠের পলিথিন কেটে লবণ লুটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একদল চিহ্নিত লোক একেরপর এক চিংড়ি ঘেরের লবণ মাঠে লুটপাট ও তান্ডব চালিয়ে আসছে। তাদের কাছে লবণ চাষীরা জিম্মি। একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে এলাকার শান্তি শৃংখলা রক্ষায় তিনি প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, এ বিষয়ে কেউ অবগত করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।c