ই-পেপার | সোমবার , ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কক্সবাজার এলো উদ্বোধনী ট্রেন

কক্সবাজার অফিস :

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী যে ট্রেন উদ্বোধন করবেন সেটির বগি চট্টগ্রাম থেকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ছেড়ে কক্সবাজারে পৌঁছে সন্ধ্যা ৬ টা ৫০ মিনিটে। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধনী ১৫ বগির সঙ্গে অতিরিক্ত আরো ৪টি বগি নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দেয় ট্রেনটি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথে আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী যে ট্রেন উদ্বোধন করবেন সেটির বগি মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গেছে। ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ সবগুলো বগি সম্পূর্ণ নতুন। যা কোরিয়া থেকে আনা হয়েছে। রেলের ঊর্ধতন কর্মকর্তা, পুলিশ, আরএনবি সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই ট্রেন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ম্যানেজার প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে প্রধানমন্ত্রী ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী ট্রেনে রয়েছে ১৫টি নতুন বগি। এই ১৫ বগির সঙ্গে আরো অতিরিক্ত ৪ বগি চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছেড়ে গেছে। ১৫ বগিতে যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত ৪ বগি থেকে যুক্ত করা হয়েছে। ট্রেনে থাকা একটি ইঞ্জিনে যদি কোন ত্রুটি দেখা যায় সঙ্গে সঙ্গে অন্য ইঞ্জিন যাতে লাগানো যায় সেজন্য নেওয়া হয়েছে আরও অতিরিক্ত তিনটি ইঞ্জিন।

 

উল্লেখ্য, আগামী ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন তিনি টিকিট কেটে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন। উদ্বোধনের দিন সকালে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে উপস্থিত হবেন। সেখানে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন উপলক্ষে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে উঠে এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন। পরবর্তীতে স্টেশন চত্বরে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। এরপর সেখান থেকে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন তিনি।২০১০ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমদুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত ব্রিটিশ আমল থেকেই রেললাইন আছে। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে এই প্রকল্পের ব্যয় র্নিধারণ করা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকারের অগ্রাধিকার এই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখনো ৯ স্টেশনের মধ্যে বেশ কয়েকটির কাজ চলছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

 

এর আগে রোববার ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়। রেলওয়ে পরিদর্শন অধিদপ্তরের সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে প্রথম ট্রেনটি কক্সবাজার পৌঁছে সন্ধ্যা ৬ টা ২০ মিনিটে। সফলভাবে কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছার পর ট্রেনটি কিছুক্ষণ বিরতি শেষে পুনরায় চট্টগ্রাম ফিরে আসে। এর মধ্যে দিয়ে যেন কক্সবাজারের মানুষের বহু বছরের আক্ষেপ গোছানোও হলো শুরু হয়।

সিএনএন বাংলা২৪