শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নে অবস্থিত আল্লামা সিকান্দর শাহ্ (রহ.) ইসলামী কমপ্লেক্সের অধীনে পরিচালিত ‘সরল হাকিমিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষকেরা। প্রচণ্ড তাপদাহে খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করায় অর্ধেকের বেশি ছাত্র-ছাত্রী মাদরাসায় যাওয়া আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। সম্প্রতি বাঁশখালীতে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে নির্মিত মাদরাসার টিনসেট বিশিষ্ট শ্রেণিকক্ষ ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এতে টিনের চালা উড়ে যায় বহুদূরে। অপরদিকে অর্ধপাকা ভবনে টিনের চালাটিও উড়ে যায়। যার দরুণ এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় খোলা আকাশের নীচে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলছে পাঠদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সরল গ্রামে ১৯৮২ সালে বাঁশখালীর সর্বজন শ্রদ্ধেয় পীরে কামেল আল্লামা সিকান্দর শাহ (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সরল হাকিমিয়া (স্বতন্ত্র) ইবতেদায়ী ও দাখিল মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীরা প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা পড়ার পরিবেশ ঘূর্ণিঝড়ে ধ্বংস হওয়ায় শিক্ষক ও অভিভাবক মহল দুঃখ প্রকাশ করেন। মাদরাসায় আর্থিক কোনো ফান্ড না থাকায় এহেন অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা ও বিত্তবানদের সুদৃষ্টি কামনা করেন মাদরাসা সংশম্লিষ্টরা। ওই মাদরাসায় শিশু শ্রেণি থেকে ৬ষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। খোলা আকাশে ক্লাস নেওয়ার পর থেকে বর্তমানে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশ নেয় না। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় প্রচণ্ড গরমে ছেলে-মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একইসাথে হেফজ ও এতিমখানায় রয়েছে ২১ জন শিক্ষার্থী।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি শাহজাদা মাওলানা কাছেম উল্লাহ্ বলেন- ‘আমরা এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে আল্লামা সিকান্দর শাহ্ (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মাদরাসার কার্যক্রম অতীব কষ্টে চালিয়ে যাচ্ছি। ইবতেদায়ী ও দাখিল মাদরাসার পাশাপাশি হেফজ ও এতিমখানাও সমানভাবে চালিয়ে যাচ্ছি। ঘূর্ণিঝড়ে মাদরাসার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের মাদরসার স্থাপনা নির্মাণে বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে এলাকার ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার পরিবেশ আরো সুগম হবে, স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে।’ মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. গোলাম আযম জানান, দীর্ঘদিন ধরে টিনের ঘরে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। অর্ধপাকা একটি হলরুমে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের পড়াতে হচ্ছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে আমাদের মাদরাসার টিনসেট কক্ষটি উড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। নিরুপায় হয়ে খোলা আকাশের নিচেই পাঠদান করাতে হচ্ছে আমাদের। আমাদের আর্থিক কোন ফান্ড না থাকায় সহসা স্থাপনা পুনঃনির্মাণ করতে পারছিনা। সমাজের বিত্তবান, উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষাবিভাগের সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।’