ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকায় নেওয়ার কথা বলে বাসে তুলে নারীকে ধর্ষণ, চালক আটক

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ :

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় গৃহবধূকে (২২) ধর্ষণ মামলায় জাহাঙ্গীর আলম (৩১) নামের এক বাসচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় ইমাম পরিবহনের বাসটি জব্দ করে পুলিশ।

গ্রেফতার জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার গোবরাকুড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে। তিনি হালুয়াঘাট থেকে ঢাকাগামী ইমাম পরিবহনের চালক। ভুক্তভোগী নারী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

 

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকালে মামলার পর ওই নারীকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গ্রেফতার জাহাঙ্গীর আলমকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

 

এরআগে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে হালুয়াঘাটের একটি বাসা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার ও জাহাঙ্গীর আলমকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

পুলিশ জানায়, ওই গৃহবধূ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ওই গৃহবধূ। ঢাকার বাসে উঠিয়ে দেওয়ার জন্য তার সঙ্গে আসেন বৃদ্ধ নানা। তবে, ওই নারী ঢাকার বাসে না উঠে ভুলে হালুয়াঘাটের বাসে উঠে পড়েন। হালুয়াঘাটে গিয়ে বাস থেকে নেমে ওই নারী তার স্বামীর কাছে ফোন করেন। স্বামী তার কাছে জানতে চান তিনি কোথায় আছেন। কিন্তু তিনি জায়গার নাম বলতে না পারায় বাসচালকের সহকারীকে মোবাইল ফোন দিতে বলেন।

 

সহকারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তিনি ঢাকার বাসে না উঠে ভুল করে হালুয়াঘাটের বাসে উঠেছেন। পরে বাসের চালক গৃহবধূকে হালুয়াঘাট বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঢাকাগামী অন্য বাসে তুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন। বিকেল ৩টায় বাসচালকের সহকারী ওই নারীকে বাসস্ট্যান্ডে একটি দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য বাসে উঠিয়ে দিতে সামনে যান।

 

এসময় অন্য এক বয়স্ক নারী জানতে চান তিনি কোথায় যাবেন। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইমাম পরিবহনের বাসের চালক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি তাদের কথা শুনে ওই নারীর পিছু নেন। যে বাসে করে ওই গৃহবধূ হালুয়াঘাটে এসেছিলেন সেই বাসের চালক তাকে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠিয়ে দেন। সুযোগ বুঝে সেই বাসে উঠে পড়েন জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর ওই নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে জানান, এ বাসে গেলে ঢাকায় যেতে গভীর রাত হয়ে যাবে। তিনি যেন তার বাসে ঢাকায় যান। তার বাস রিজার্ভ করা আছে এবং ধারা বাজার এলাকায় রাখা। রাত ৮টার মধ্যেই ঢাকায় নিয়ে যাবেন।

 

ওই নারী সরল বিশ্বাসে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ধারা বাজার মুরগি মহাল এলাকায় নেমে পড়েন। তারপর জাহাঙ্গীর ওই নারীকে নিয়ে মুরগি মহালের পাশে নির্জন স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখা ইমাম বাসে উঠে বসতে বলে অপেক্ষা করতে বলেন।

 

বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম বাসে উঠে দরজা বন্ধ করে দেন এবং ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। পরে তিনি কয়েকটি জায়গায় নিয়ে তাকে কয়েক দফা ধর্ষণ করেন। পরে সুযোগ বুঝে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে ওই নারী তার বাবাকে মোবাইলে বিষয়টি জানান। তিনি বিষয়টি হালুয়াঘাট থানাপুলিশকে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে ওই নারীকে পাগল পাড়ার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে ইমাম পরিবহনের বাসটি জব্দ ও জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান ওসি সুমন চন্দ্র রায়।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪