ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, শিক্ষকের যাবজ্জীবন

ইকরা তৌহিদ মিম

চট্টগ্রামে সাত বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আবু তাহের শিপন (২৮) নামে এক শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আবু তাহের চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া গ্রামের মৃত আবুল কালাম প্রকাশ ফখড়ের পুত্র।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ জুন সকালবেলা মাদরাসায় যায় প্রথম শ্রেণির ওই ছাত্রী। সেদিন তার পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে মাদরাসার বারান্দায় শিশুটি তার বড় ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। কিন্তু গাড়ি চালক বড় ভাই সেদিন দূরের জায়গায় ভাড়া নিয়ে যাওয়ায় ছোট বোনকে মাদরাসায় আনতে যেতে পারেননি।

 

এদিকে ভাইয়ের জন্য মাদরাসার বারান্দায় অপেক্ষায় থাকা ওই ছাত্রীকে একা দেখতে পেয়ে বেত দিয়ে মেরে তাকে জোর করে মাদরাসার অফিস কক্ষে নিয়ে যান শিক্ষক আবু তাহের শিপন। সেখানে ওই শিশু ছাত্রীকে তিনি ধর্ষণ করেন। পরে শিশুটিকে বাড়িতে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয় দেখান।

 

পরে শিক্ষক আবু তাহের শিপন পুকুরে গেলে মেয়েটি অফিস কক্ষ থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যায়।

ধর্ষণের ঘটনা শিশুটির পরিবারে জানাজানি হলে পরে তাকে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর পিতা২০২১ সালের ১৩ জুন সন্দ্বীপ থানায় মামলা করেন। মামলায় শিক্ষক আবু তাহের শিপনকে আসামি করা হয়।

এ ঘটনায় শিশুটি ২২ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেয়। ট্রাইব্যুনালে চিকিৎসক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আসামি আবু তাহের শিপনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) জিকো বড়ুয়া জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আবু তাহের শিপনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।

মামলাটি পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষে পিপির সঙ্গে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শিমুল বড়ুয়া, সুস্মিতা বড়ুয়া ও চৈতি বড়ুয়া।