ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পটিয়ায় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে মাঠে থাকতে হুইপ সামশুল হকের নির্দেশ

আবদুল হাকিম রানা, পটিয়া

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় টানা বর্ষণের ৪র্থ দিনে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। এ নিয়ে উপজেলার দুর্যোগময় এলাকাগুলোর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। সরকারিভাবে প্রাপ্ত চালসহ শুকনো খাবার চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়।

সোমবার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভা উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্রগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরী।
ইউএনও আতিকুল মামুনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম, থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার, চেয়ারম্যান এম এ হাসেম, চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম সানু, চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চৌধুরী, চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ, পটিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানা, পিআইও রবিউল হোসেন, কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সব্যসাচী নাথ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমাকান্ত মজুমদার, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মীর আনজুম সাকিব মহিলা বিষয়ক কর্মকতা প্রমুখ।

 

এতে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী দুর্যোগ মোকাবেলা ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, পটিয়ায় কোনো মানুষ না খেয়ে থাকতে পারবে না। সেজন্য সরকারী বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি পানিবন্দী মানুষগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে, বিশেষ করে এলকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকল আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে বলেন, প্রয়োজনে তাদেরকে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি এক্ষেত্রে তার পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন ।

এছাড়াও কৃষি, মৎস্য এবং প্রাণী সম্পদ বিভাগকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করার আহবান জানিয়ে বলেন, পানি নামলে আমন বিজতলা পুন: তৈরী করার জন্য কৃষকদের পাশে থাকতে হবে। প্রয়োজনে উঁচু জায়গায় কৃষকদের আমন ধানের চারা প্রস্তুত করে বিনামূল্যে সরবরাহ করতে হবে। এজন্য তিনি বিশেষ বরাদ্ধ দেওয়ারও ঘোষণা দেন।

 

এছাড়াও তিনি বিদ্যুৎ ও প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে যে কোনো বিষয়ে সেবা পেতে দুর্গত মানুষকে সরাসরি যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তিনি পুলিশ বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের দুর্যোগকালীন যে কোনো ধরণের চুরি-ডাকাতি রোধে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

 

উল্লেখ্য বিগত ৪ দিনের বর্ষণে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়ক ও এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে সকল শ্রেণির মানুষ পানির মধ্যে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এছাড়াও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরা খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানিতে শতশত পুকুর ডুবে যাওয়ায় কয়েক কোটি টাকার মৎস সম্পদ পানিতে ভেসে গেছে। শতশত একর আমন ধানের চাষাবাদ পানির নিচে থাকায় কৃষকরা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে পটিয়ায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী ও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল মামুন জানান ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র, উদ্ধার টিম, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে ইতোমধ্যে প্রস্তুত করে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর ৪২টি ট্রান্স ফরমার বিকল ও ৩০০ কিঃ মি : বৈদ্যুতিক লাইনের বিভিন্ন স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী জানান, দক্ষিণ চট্রগ্রামের ৮ উপজেলার ভৌগলিক এলাকায় টানা বর্ষণের মাঝেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলছে পুনরুদ্ধার কাজ। অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত থাকায় পুনরুদ্ধার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তিনি ছেড়া তার দেখলে নিরাপদে থেকে চলাচল ও সংস্কার কাজে সকলকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪