ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৌলভীবাজারে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানান উদ্যোগ

আব্দুল বাছিত খান, মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে পৌরসভা। এখন থেকে শহরের বিভিন্ন সড়কে লাল, সবুজ ও কমলা রঙের চিহ্নিত সিএনজিচালিত টমটম চলাচল করবে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে জেলা শহরে যানজট নিরসনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তিন কালারের সিএনজিচালিত টমটম চলাচল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল হোসেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোহাম্মদ নাছের রিকাবদার, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ নকিবুর রহমান, পৌর কাউন্সিলরসহ টমটম মালিক ও চালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

 

১৯ জুলাই দুপুরে জেলা শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কে গিয়ে দেখা যায়, এই রোডে কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রবেশ করছে না। তবে টমটম ও রিকশা চলাচল করছে।

 

পৌরমেয়র মো. ফজলুর রহমান শহরে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও পরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নে তদারকি করছেন।

যানজট নিরসনে প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে নানা উদ্যোগ নিলেও কার্যতঃ তা কোনো কাজে আসেনি। দিন দিন এর তীব্রতা এতো বেড়েছে যে, শহরের মানুষ হেঁটেও চলাচল করতে পারছেন না।

 

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই শহরজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় শহরের যানজট নিরসনে নতুন এক উদ্যোগ নেয়। শহরে এখন চলবে শুধু সিএনজিচালিত টমটম।

 

শহরে লোকাল ট্রিপ দিতে পারবে না কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা। শহরের বিভিন্ন সড়কে চলবে লাল, সবুজ ও কমলা কালারে টমটম। যানজট নিয়ন্ত্রণ ও পরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে মৌলভীবাজার পৌরসভা।

 

এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শহরে বিআরটিএ কর্তৃক প্রদত্ত প্লেট নম্বরের টমটম গাড়িগুলোর মধ্যে জোড়া সংখ্যাধারী সবুজ ও বিজোড় সংখ্যাধারী কমলা রঙে রূপান্তর করে জোড়-বিজোড় দিন ভিত্তিতে চলবে।

 

বিআরটিএ নম্বরের প্লেট ও নবায়ন ছাড়া কোনো সিএনজিচালিত টমটম চলাচল করবে না। শহরের রিজার্ভ সিএনজি অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে প্রবেশ করে যাত্রী নামিয়ে শহর ত্যাগ করবে। রিজার্ভ ব্যতিত ভাড়ায় শহরের কোনো রোডে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না।

শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কে শুধু লাল রঙের টমটম ও রিকসা চলবে। চৌমোহনা থেকে কুসুমবাগ পর্যন্ত ভাড়া ৫ টাকা হবে। অন্য সড়কগুলোতে পূর্বের মতো ভাড়া থাকবে। রাস্তার ওপর কোনো সিএনজি স্ট্যান্ড, টমটম স্ট্যান্ড থাকতে পারবে না। যত্রতত্র মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন পার্কিং করা যাবে না।

 

এ বিষয়ে টমটম চালকেরা বলেন, একদিন পরপর গাড়ি চললেও রুজি বাড়বে। যেদিন গাড়ি চালাবো না, সেদিন অন্য কাজ করবো, বাড়তি রুজি হবে।

 

চালক সোহেল মিয়া বলেন, আগে গাড়ি চালিয়ে মালিককে ৪ শত টাকা ও গ্যাস লোড করে হাতে তেমন টাকা থাকতো না। এখন গাড়ির সংখ্যা কমায় আমাদের আয় বাড়বে।

 

ব্যবসায়ী হাসান আহমদ বলেন, প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি চালকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

 

পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান জানান, জেলা শহরে প্রায় ৯ শত সিএনজিচালিত টমটমের নিবন্ধন রয়েছে। এর মধ্যে সেন্ট্রালরোডে চলবে দিনে ৩০টি। বাকিগুলো একদিন পরপর শহরের অন্য সড়কে চলাচল করবে। অর্থাৎ একদিন যে সিএনজিচালিত টমটম চলবে পরদিন সেটির চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।

 

কোন দিন কোন সিএনজিচালিত টমটম চলাচল করবে, তা রেজিস্ট্রেশন নম্বরের জোড় এবং বেজোড় সংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

একমাত্র এম সাইফুর রহমান সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভেও চলবে না তবে অন্য সড়কে রিজার্ভে চলবে।

পৌরমেয়র বলেন, এভাবে চললে শহরে যানজট কম হবে। চৌমোহনা থেকে কুসুমবাগ পর্যন্ত ভাড়া ৫ টাকা হবে। অন্য সড়ক গুলোতে পূর্বের ন্যায় ভাড়া থাকবে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টমটম শহরের মধ্যে চলাচল করতে পারবে না।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: