ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিশু হত্যা-ধর্ষণের বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক,কুমিল্লা:

কুমিল্লা: কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার শিশু তানজিম সুলতানা ঝুমুরকে (৯) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড আকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বুধবার (১ মে) র‌্যাব-১১ কুমিল্লা কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়।

 

এসময় র‌্যাব-১১ পরিচালক তানভীর মাহমুদ পাশা ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি চোখ মোছেন এবং ধরা গলায় ঘটনার বর্ণনা দেন। এসময় উপস্থিত অনেক সাংবাদিককেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।

ধর্ষণের পর হত্যার শিকার শিশু কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের একমাত্র মেয়ে। সে স্থানীয় সোনালী শিশু বিদ্যানিকেতনের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানাধীন ফেরুয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলার খিলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মফিজুল ইসলাম প্রকাশ মফু (৩৮)।

 

র‌্যাব-১১ পরিচালক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, ঘটনার দিন ২৯ এপ্রিল সকালে ঝুমুর স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু বেলা ১১টা পার হলেও ঝুমুর বাড়ি না ফিরলে মা স্কুলে যান। সেখানে তাকে না পেয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে ঝুমুরের সহপাঠীর কাছে জানতে পারেন সে স্কুল শেষে বাড়ি চলে গেছে। কিন্তু ঝুমুরের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। বিকেলে বাড়ির অদূরে ধান ক্ষেতে একটি শিশুর মরদেহ পড়ে আছে তিনি জানতে পেরে সেখানে গিয়ে মরদেহটি তার মেয়ের শনাক্ত করেন।

 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানান, গ্রেপ্তার মফিজুল ইসলাম মফুকে ঘটনাস্থলের পাশের থাকা বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে দ্রুত রাস্তায় উঠে আসতে দেখেছেন।

 

গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঝুমুরকে সে চিনত। এই সুযোগে ২৯ এপ্রিল সকালে ঘটনাস্থলের পাশের রাস্তায় ওৎ পেতে থাকে। ঝুমুর ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছালে মফু ঝুমুরকে রাস্তার পাশের ধানী জমিতে নিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ঝুমুর চিৎকার করার চেষ্টা করলে মফু তার মুখ ও গলা চেপে ধরে। এতে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। কোনো নড়াচড়া দেখতে না পেয়ে ভিকটিমের কানে থাকা দুল ছিঁড়ে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মফু।

 

এ ঘটনায় ঝুমুরের পরিবার মামলা দায়ের করলে মফু চাঁদপুরে পালিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মফু মাদকাসক্ত ও তার বিরুদ্ধে গাঁজা সেবনের বিষয়েও তথ্য পাওয়া গেছে।