ই-পেপার | শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মানবপাচারকারীর খপ্পরেপড়া দোছড়ির যুবকদ্বয় বার্মার জেলের ঘানি টানছে ১ বছর,স্বজনদের আহাজারি

মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু,নাইক্ষংছড়ি:

মানবপাচারকারীর খপ্পরে পড়ে নাইক্ষ্যংছড়ির দু’যুবক মিয়ানমারের জেলের ঘানি টানছে ১ বছর ধরে৷

ফলে একদিকে যুবকদ্বয়ের ভবিষ্যৎ যেমন অন্ধকারে পতিত অপরদিকে পরিবারের স্বজনদের মাঝে আহাজারি ও কান্না বাড়ছে দিনদিন। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে বিষয়টি এভাবে জানতে পরেন এ প্রতিবেদক উপজেলার সীমান্তঘেষা দোছড়ি ইউনিয়নের কুলাচি ও ফুট্টাঝিরি গ্রামে গিয়ে। গ্রাম দু’টি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়।

যুবকদ্বয়ের স্বজনরা জানান,গত কুরবানের ঈদের ৪ তিন পর তাদের দু’ ছেলে যথাক্রমে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ফুট্টাঝিবি গ্রামের বাসিন্দা মৃত মোহাস্মদ হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২০) আর একই ইউনিয়নের কুলাচি গ্রামের হাফেজ আহমদের ছেলে মুবিনুল হক ( ২২) কে ফুসলিয়ে চিহ্নিত মানবপাচারকারী মালয়েশিয়ার কথা বলে নিয়ে যায় প্রথমে টেকনাফে।

সেখান থেকে সাগরপথে জেলেদের ফিশিং বোটে তুলে নিয়ে যায় মিয়ানমারের এরাউড্ডি প্রদেশের এক গহীন জঙ্গলে।১৫ দিন তাদেরকে সেখানে সাগর পাড়ের গহীন একজঙ্গলে নিয়ে যায় তারা। যেখানে মারধর করে তাদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা আদায় করে নেয় চক্রটি। এর পর রহস্যজনকভাবে তারা মিয়ানমার পুলিশের কাছে তুলে দেয়।

পুলিশ তাদেরকে আটক করে জেলেখানায় পাঠিয়ে দেয় তৎক্ষনাৎ। বর্তমানে তারা মিয়ানমারের মেলাবাইনের জেলের ৮ নম্বর কক্ষে রয়েছে দাবি করেন তারা।

জেলেবন্দি এ দু’যুবক নানা মাধ্যমে ও কৌশলে তাদের পরিবারকে জানান,তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে সেখানে। তাদের পাচারকাজের চিহ্নিত দালাল ছিলো দোছরী নজরুল,জনৈক আজিজ মৌলা ও মোহাম্মদ আলী সহ অনেকে। তাদের অনেকে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে আবার অনেকে এ দেশে। যেখানে খাবার দেয়া হয় না ঠিকভাবে। মাঝে মধ্যে যা দেয় তা খাবার অনুপযোগী। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন তো আছেই। এভাবে তাদের ঘন্টা-মিনিট-মুহূর্ত পার হচ্ছে তাদের।

রফিকুল ইসলামের মা জমিলা খাতুন বিলাপকান্নারত অবস্থায় এ প্রতিবেদককে বলেন,তার ছেলেটি ছোট-অবুঝ আর নাবালক।সে সূযোগে মানবপাচারকারী চক্রটি লোভ দেখিয়ে তার ছেলেকে মালয়েশিয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। আসলে তারা নিয়ে গেছে মিয়ানমারের জঙ্গলে। আর মারধর ও অমানবিক নির্যাতন করে ২ লাখ টাকা করে আদায় করে মিয়ানমার পুলিশের হাতে তুলে দেয় তারা।পুলিশ তাদের আটক করে জেলখানায় ঢুকায়। এখন সেখানে অনাহারে -অর্ধাহারে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তারা।

তিনি তার সন্তান রফিকুল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানান। যেভাবে সম্প্রতি ১৭৩ জনকে জরুরীভাবে সরকার এনেছেন বাংলাদেশে। এ ঘটনায় তিনি সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

একই দাবী করেন একই জেলখানার একই রুমে থাকা মুবিনুল হকের পিতা হাফেজ আহমদও। তিনি ও কাছে অনুরুপ দাবী জানান সরকারের কাছে।