নিজস্ব প্রতিনিধি :
বরগুনার প্রেসক্লাবে আটকে মারধরের ১১ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তালুকদার মাসউদ নামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই সাংবাদিক মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় হামলার শিকার হয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ দৈনিক ভোরের ডাক ও দৈনিক দেশবাংলা প্রতিদিন পত্রিকা ও রাজধানী টেলিভিশন নামে একটি আইপি টিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি। এ ছাড়াও বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি আবদুল ওয়াহাব মাস্টারের ছেলে।
নিহত ইউপি সদস্য তালুকদার মাসুদের স্ত্রী সাজেদা বলেন, ‘গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে এনটিভির বরগুনা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজ ও তার ১০-১২ জন সহযোগী মিলে হামলা চালিয়ে আহতাবস্থায় তালাবদ্ধ করে রাখে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা ও পরে উন্নত চিকিতসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার ১১ দিন পর গতকাল শনিবার (২ মার্চ) রাত ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তালুকদার মাসউদ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাছরাঙা টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি মুশফিক আরিফ বলেন, ‘প্রেসক্লাবে ক্যরাম খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে প্রেসক্লাবের ৩য় তলার অফিস রুমে বসে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মিলে হামলা চালিয়ে মারধরের পর তালাবদ্ধ করে রাখে তাকে। পরে বরগুনা সদর থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তালুকদার মাসউদকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
নিহত তালুকদার মাসউদের মেয়ে সাদিয়া তালুকদার তন্নি বলেন, ‘মৃত্যুর আগে আমার বাবা ভিডিও বার্তায় বলে গেছেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবের ৩য় তলার অফিসরুমে বসে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে দৈনিক ভোরের আকাশের জেলা প্রতিনিধি কাশেম হাওলাদার, এনটিভির ক্যামেরা পার্সন আরিফুল ইসলাম মুরাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে হামলা চালিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল।’
তন্নি আরও বলেন, ‘আমার বাবাকে ওরা প্রেসক্লাবে আটক রেখে হামলা করে হত্যা করেছে। আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাসেম মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলা থেকে তালুকদার মাসুদ নামের এক সাংবাদিককে আমরা গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসায় পাঠিয়েছিলাম।
রোববার রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হওয়ার পর আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।’