![](https://cnnbangla24.com/wp-content/uploads/2024/03/Untitled-Project-4-1.jpg)
শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী
কয়েকটি বাঁশের সাথে টুকরো টুকরো পলিথিনের কাগজ দিয়ে ঘেরা ঘরে থাকেন কৃষক আবছারের দম্পতি। সন্তানদের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার আর পরনের কাপড় জোগাতেও তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন অল্প বয়সের তিনটি শিশু সন্তান নিয়ে পলিথিনের ঘরে দিন কাটছে বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজের বাড়ীর দরিদ্র্য দিনমজুর কৃষক আবছার (৩৫) ও তার স্ত্রী মোসাদ্দেকা বেগমের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা গ্রামের মৃত মাহমুদ উল্লাহ এর একমাত্র ছেলে আবছার। দরিদ্র্য পরিবারের সন্তান আবছার। আবছারের দুই বোন, কোনো ভাই নেই। বোনদের বিয়েও হয়েছিল। বিয়ের পর মানসিক সমস্যার কারণে তাদের সংসারও টিকেনি। চলে আসেন পৈত্রিক ভিটায়। যে ঘরে ভাই আর ভাইয়ের স্ত্রী থাকাই কষ্টসাধ্য সেখানে থাকার জায়গা নেই তাদের। তারা থাকেন পাশের প্রতিবেশীর বাড়িতে। তারাও মানবেতর জীবন যাপন করছে। একই এলাকার কবির আহমদের কন্যা মোসাদ্দেকা বেগমের সাথে আবছারের বিয়ে হয় ২০১৭ সালের দিকে। তাদের তিন সন্তান আছে। বড় সন্তানের বয়স ৪ বছর।
আবছার দিনমজুর কৃষি কাজ করেন। কাজ জুটলে কোনো রকম সংসার চলে মাত্র। হতদরিদ্র্য এ দম্পতির জীবন চলে খুবই কষ্টের মধ্য দিয়ে। থাকার জায়গাটি দেখলেই মনে হয় এখানে মানুষ থাকেন না। পলিথিনের ঘরেই তারা মানবেতর জীবন যাপন করে আসছেন। এলাকার বিত্তশালীদের নজরে পড়েনি। এগিয়ে আসেনি কেউ। অন্তত থাকার ঘরটিই বসবাসের উপযোগী হলে শান্তিতে ঘুম দিতে পারতো খেয়ে না খেয়ে। শীতের তীব্রতা আর গ্রীষ্মের প্রখরতা এবং বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজে বাধ্য হয়েই কোনরকম দিনাতিপাত করছে এ দম্পতি। দিনমজুরের কাজ করে তাদের সংসারের খরচই চালাতে পারেন না। যার ফলে ঘরও উত্তোলন করতে পারেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, ‘সভ্যতার এ যুগে মানুষ এমন ঘরে থাকাটা বিরল। বলতে গেলে একদম জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় কয়েকটি বাঁশের সঙ্গে টুকরো টুকরো পলিথিন দিয়ে ঘেরা মরিচাধরা টিনের বেড়ায় থাকছেন তারা। ঘরের ভিতরে ডুকলেই দেখা যায় বসবাস করার অনুপযোগী। বৃষ্টি হলেই সব পানি ঘরের মেঝেতেই পড়বে। মানুষের পাড়ায় এ যেন অমানবিক চিত্র।
এমন মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে আবছারের স্ত্রী মোসাদ্দেকা বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুর দিন আনে দিন খায়। কাজ করলে পেটে ভাত জুটে। ছোট ছোট তিনটা সন্তান আছে আমাদের। তাদের অসুখ হলে ভালমতো চিকিৎসা করাতে পারি না। থাকার জায়গাটা ছাড়া আর কোন সম্বলও নাই। বিত্তবানদের সহযোগীতায় যদি ঘরটিতে থাকার মতো সংস্কারের ব্যবস্থা হয় তাহলে তিন’টি শিশু সন্তান নিয়ে একটি মাথা গোজানোর পরিবেশ হতো।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মনির উল্লাহ্ রিয়াদ বলেন, দিনমজুর কৃষক আবছার ও তার স্ত্রী ছোট ৩ সন্তান নিয়ে পলিথিনে মোড়ানো ঘরেরই মানবেতর জীবন যাপন করছে। বর্ষা কিংবা শীতের মৌসুমে ঘরটিতে বসবাস করার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সামাজিক দায়বদ্ধতার দিক থেকে ঘরটি সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহন করেছি। বিত্তবানদের সহযোগীতা পেলেই তাদের থাকার ঘরটিই সংস্কার করতে পারবো। তাই সমাজের স্বচ্ছল ব্যক্তিদের সহযোগীতা কামনা করছি।