ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ বিজিবি ডিজির

জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি :

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

বুধবার (৭ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় বান্দরবান জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাইক্ষ্যংছড়ি -তুমব্রু সীমান্ত পরিদর্শন শেষে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

 

বিজিবির মহা পরিচালক এক প্রেস ব্রিফিং বলেন, পুরো মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলছে। যার প্রভাব বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেও এসে পড়েছে। প্রতিনিয়ত সেখানকার অস্থিতিশীল অবস্থা ও সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর প্রভাব যেনো বাংলাদেশ না পড়ে সে বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে অবগত ও দ্রুত তাদের বিজিপি সদস্যেদের ফিরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।

বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এসময় তিনি বিজিবি সদস্যদের সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।

এ সময় বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার, রামু সেক্টর কমান্ডার, নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবির অধিনায়কসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহব্যাপী নাইক্ষ্যংছড়ি মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু, ঘুমধুম এলাকায় আরাকান বিদ্রোহী গ্রুপের সাথে মিয়ানমারের সরকারী বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি, মর্টারশেলের গোলা, হেলিকপ্টারের সাহায্যে বোমা বর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। এসময় গুলিতে ৫ বাংলাদেশী গুরুতর আহতসহ রকেট ও মর্টারশেলের গোলায় এক বাংলাদেশী নারী ১ রোহিঙ্গা নাগরিকসহ ২জন নিহত হয়। এছাড়াও রকেট লাঞ্চারের গোলায় বসতঘর বিধস্থ হয়। বর্তমানে সীমান্তের ৫টি গ্রাম জনমানব শূন্য।
তবে গতকাল রাতের মাঝামাঝি সময় থেকে তুমব্রু সীমান্তে কোন প্রকার গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য দীল মোহাম্মদ ভুট্টো।

 

ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মোটামোটি পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেলেও আতংক কাটেনি। এ পরিস্থিতির কারণে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র অনেকের ঠাঁই হয়েছে। বুধবার পরিস্থিতি একটু শান্ত থাকায় অনেকে বাড়ি ফিরেছেন। ঘুমধুম সীমান্তে হালকা গোলাগুলির আওয়াজ এলেও পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পথে। এমন সময়ে এবার টেকনাফের হোয়াইক্যং দিয়ে ৬৩ জন বিজিপির সদস্য অনুপ্রবেশ করেছে। ঘুমধুম ও হোয়াইক্যং দুই সীমান্ত দিয়ে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩২৭ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য অবুপ্রবেশ করে বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছে।

 

মঙ্গলবার এ পরিস্থিতিতে সীমান্ত পরিদর্শন করেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মুজাহিদ উদ্দিন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান ও বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সৈকত শাহীন। তাঁরা ঝুঁকিতে বসবাসকারী জনগণকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন।