বিশেষ প্রতিনিধি :
মায়ের কোল আলো করে এক সঙ্গে জন্ম নেয়া চার ছেলে সন্তান এক রাতের মধ্যেই মারা যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন রাজবাড়ী জেলার রাজন বিশ্বাস ও বৈশাখী রায় দম্পতি।
এমন এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ী জেলা শহরের পৌরসভার ভাজনচালা গ্রামে।
গত শনিবার ভোরে ঢাকার শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।
একসঙ্গে চার ছেলে সন্তান জন্ম দেওয়ার আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নিয়েছে চরম বিষাদে। এতে পরিবারের সদস্য ও তাদের আত্মীয় স্বজনের মাঝে এখন শোকের মাতম।
জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একসঙ্গে জন্ম গ্রহণ করে চার নবজাতক। পরে নবজাতকদের শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা শিশু হাসাপাতালে প্রেরণ করেন। এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
গত শনিবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের অম্বিকাপুর শ্মশানে মৃত চার নবজাতককে একসঙ্গে সমাহিত করা হয়।
সুমন কুমার বিশ্বাস জানান, চার নবজাতকের মা বৈশাখী রায় আমার ছোট ভাই রাজন বিশ্বাসের স্ত্রী। তিনি রাজবাড়ী শহরের ভাজনচালা এলাকার ভোলানাথ বিশ্বাসের ছেলের বউ। রাজন বিশ্বাস পেশায় একজন মুদি ব্যবসায়ী। নবজাতক চার সন্তানের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
নবজাতকদের বাবা রাজন বিশ্বাস জানায়, ২০১৯ সালে পারিবারিকভাবে বৈশাখীকে বিয়ে করি। গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় বৈশাখী। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও ৩ ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। প্রথমবারের মতো বাবা-মা হয়েছিলাম আমরা। বিধাতা আমাদের ৪টি ছেলে সন্তান দিয়েও একদিনের ব্যবধানে সব কেড়ে নিয়ে গেল।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চার ছেলে সন্তানের জন্ম দেন বৈশাখী বিশ্বাস। নবজাতকদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ৯টার দিকে চার নবজাতকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে একজনকে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অন্যত্র নেওয়া হয় তিন নবজাতক কে। রাত ২টার দিকে একজন মারা যায়, ভোর পর্যন্ত চারজনই মারা যায়। রাজন বিশ্বাসের স্ত্রী বৈশাখী রায় বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।