ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে স্থলপথে গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সাহায্য পাঠানো অত্যন্ত কঠিন। সাহায্য পাঠাতে মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলের কাছে অস্থায়ী সমুদ্রবন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে।

আগামী মে মাসেই সেটি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মার্চে বন্দর তৈরির ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এ উদ্যোগের আওতায় গাজার মাটিতে কোনো মার্কিন সেনা পা রাখবে না।

মার্কিন সেনাবাহিনীর তৈরি অস্থায়ী বন্দর গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য বাস্তবে কত পরিমাণ ত্রাণ পাঠাতে সাহায্য করবে এবং সেই ত্রাণ স্থলপথে কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশেষ করে গাজার উত্তরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বেড়ে চলায় জরুরি সহায়তার প্রয়োজনের কথা বলছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, অস্থায়ী বন্দরে পাঠানো মানবিক সাহায্য ইসরায়েলি চেকপোস্টের অনুমোদনের পর গাজার অভ্যন্তরে পাঠানো যাবে।

হামাসের যোদ্ধাদের কাছে কোনো ধরনের ত্রাণ যাতে না পৌঁছায়, ইসরায়েল তা নিশ্চিত করতে চায়। জাতিসংঘের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ইসরায়েল গোটা প্রক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায়।

জাতিসংঘের সূত্র অনুযায়ী, ইসরায়েলি চেকপয়েন্টে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর কাজ সংকটের শুরু থেকেই বেশ কঠিন ছিল। এমনকি সাইপ্রাসের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ সেই ত্রাণ সহায়তা পরীক্ষা করার পরেও সেই বিলম্ব এড়ানো যাচ্ছে না। অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শেষ হলে প্রথম পর্যায়ে দিতে ৯০টি ট্রাক সেখান থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারবে।

বন্দর নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ১৫০ ট্রাক সেই বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। ইসরায়েলি চেকপোস্টের ওপর ট্রাক চলাচলের গতি অনেকটাই নির্ভর করবে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সেখানে নিরাপত্তা ও লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে। মার্কিন সৈন্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কয়েক হাজার সৈন্যের এক বিশেষ ব্রিগেড সক্রিয় রয়েছে।

নির্মাণাধীন অস্থায়ী বন্দরের কাছাকাছি বুধবারই মর্টার হামলা হয়েছে।

অস্থায়ী বন্দরের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে মানবিক সাহায্য পাঠানো সম্ভব হলেও রাফায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ঘোষিত অভিযানের কারণে গাজার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ত্রাণ বণ্টনের কাজ আরও বিপজ্জনক ও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ থাকার পরও ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর। সেই অভিযান শুরু হলে গাজার উত্তরের পর দক্ষিণ অংশেও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর আশঙ্কা।