সালেহ আহমদ স’লিপক :
মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে জমে উঠেছে ত্রিমুখী লড়াই; বাকি ৩টি আসনে নৌকার জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।
প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি ভোটার নিয়ে প্রবাসী অধ্যুসিত মৌলভীবাজার জেলার ৪টি নির্বাচনী আসনে ভোটগ্রহণের আর মাত্র ৩ দিন বাকি। মাঠের বিরোধীদল বিএনপি- জামায়াত ও তাদের মিত্র দলগুলোর বর্জনের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনেই শক্ত প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী না থাকায় নৌকার প্রার্থীদের বিজয় এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
একমাত্র আসন মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া), যেখানে নির্বাচনী মাঠে ৮ প্রার্থী থাকলেও তীব্র প্রতিদ্বন্ধীতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে ৩ হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, একেএম সফি আহমদ সলমান (স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ) ও তৃণমূল বিএনপি মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন। এই তিনজনই ভোটের মাঠে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। এই তিন প্রার্থীরই ব্যক্তি ইমেজের কারণে দলীয় ভোটের বাহিরেও নিজস্ব ভোটব্যাংকও রয়েছে বলে জানা যায়। তবে নির্বাচনে ৩ প্রার্থীর সামনেই বড় চ্যালেঞ্জ ভোট কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা নিয়ে।
এ আসনে ৮ প্রার্থীর মধ্যে মূলত এই তিন প্রার্থীকে ঘিরেই যত সব আলোচনা-সমালোচনা। ভোটের মাঠের জমজমাট লড়াইটাও হবে প্রভাবশালী এই তিন প্রার্থীর মধ্যে। প্রচার-প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোটের মাঠের তীব্র প্রতিদ্বন্ধীতার বিবেচনায় জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের সবার চোঁখ আপাতদৃষ্টিতে এখন কুলাউড়ার দিকেই সবচেয়ে বেশি। কুলাউড়ার এই আসনটিতে অন্য প্রার্থীরা হলেন, মোঃ আব্দুল মতিন (স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ), মোঃ আব্দুল মালিক (জাতীয় পার্টি, এরশাদ), মাওলানা আছলাম হোসাইন রাহমানী (ইসলামী ঐক্যজোট), এনামুল হক মাহতাব (ইসলামি ফ্রন্ট) ও মোঃ কামরুজ্জামান সিমু (বিকল্প ধারা)।
মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বন ও পরিবেশমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এর সাথে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্ধীতায় নূন্যতম টিকে থাকার মতো কোন প্রার্থী না থাকায় এই প্রার্থীর জয় এখন শুধুমাত্র অপেক্ষা। যদিও এই আসনে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী আহমদ রিয়াজ সহ আরও কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। একই চিত্র জেলার বাকী দুই আসন মৌলভীবাজার-৩ ও মৌলভীবাজার-৪ এ।
তবে বড়লখা জুড়ী মোঃ শাহাব উদ্দিন ও মৌলভীবাজার-রাজনগরে মোঃ জিল্লুর রহমান এবং শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এর জয় এখন শুধু মাত্র আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ এই ৩টি আসনেই নিরুত্তাপ ভোটের মাঠ। এই আসনগুলোতে নৌকার প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগীতার লড়াইয়ে নেই কোন হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী। তবে এই ৩টি আসনের ভোট কেন্দ্রগুলোতে নৌকার প্রার্থীদের পক্ষে ভোট কেন্দ্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
এই ৩টি আসনে নৌকার জয় সময়ের ব্যাপার হলেও ভোটের মাঠের প্রচার-প্রচারণা, উঠান বৈঠক সহ নির্বাচনী জনসভায় লোকসমাগমের দিক দিয়ে নৌকার প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে। অন্যসব প্রার্থীরা তেমন একটা প্রচার প্রচারণায় নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩টিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের একচেটিয়া প্রচার-প্রচারণা চলছে। ৩টি আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারণার মূল কারণ ভোটার আকৃষ্ট।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলায় ৬৭টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ১৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৩জন এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৮জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৫৪৯টি ও স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে বুথ থাকবে প্রায় ৩ হাজার ৩০৫টি বলে জানা গেছে।