ই-পেপার | রবিবার , ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার গণজোয়ার, সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা ভোটারদের

স্টাফ রিপোর্টার:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন আসনে নৌকার গনজোয়ার উঠেছে।

আগামী ৭ জানুয়ারী নির্বাচনে এ আসন থেকে নৌকা প্রার্থী আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন বলে শতভাগ আশা ব্যক্ত করেছেন নৌকা সমর্থক।

অপরদিকে, এ আসন থেকে পরপর দুইবার বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত ও যুবলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সমর্থকরা আশা করছেন , এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতিক নিয়ে তৃতীয় বারের মত জয়ী হবেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত দুইবার সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ভোট কেন্দ্রগুলিতে ভোট কারসাজির ঘটনা ঘটেছে। তাই, আগামী ৭ জানুয়ারী এ আসনে ভোটাদের দাবি অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতাকামনা করেছেন ।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার জানান, আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে পুলিশ ও প্রসানের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ যদি কোন অপ্রীতিকর ঘটনার চেষ্টা করে তাঁর বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হস্তে দমন করতে প্রস্তুত রয়েছে।

সরেজমিনে ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন এলাকা ঘুরে জানা যায়, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্লাহকে হারানোর জন্য সতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে গনজোয়ার উঠেছিলো। ঠিক তেমনি আসন্ন ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরীকে হারানোর জন্য নৌকার গনজোয়ার দেখা যাচ্ছে।

কারণ ২০১৪ সালের নির্বাচনে জনগনের কাছে নিক্সন চৌধুরী যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন। তিনি তা পালন করেননি। তিনি নির্বাচনী বক্তব্যে ছয় কথার পুঁথি পড়েছিলেন। সেগুলো হলো- তৎকালিন ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেদায়েত উল্লাহ; সাকলায়েন কাজীকে ট্রাক ড্রাইভার, দূর্নীতিবাজ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। এবং তৎকালিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমানকে ডাকাত,ভুমি দস্যূ ও দূর্নীতিবাজ বলে আখ্যায়িত করেন।

এছাড়াও তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী ভাঙ্গা খাদ্য গুদামে সিন্ডিকেট তৈরি করে কৃষকের হক নষ্ট করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে শিল্পপতি বনে যাওয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে এসকল নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ জনগনের সম্মূখে তাদরে বিচার করবেন বলে নিক্সন চৌধুরী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

তখন সময় উপযোগী বক্তব্য দিয়ে জনগনের মন জয় করেন নিক্সন চৌধুরী জনগন তাঁর কথায় বিশ্বাস করে তাকে নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয় করেন। কিন্তু, নির্বাচনে এমপি হওয়ার পরেও তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন।

বরং উল্লেখিত কয়েকজন ব্যক্তি বিএনপি-জামায়াত ও নৌকা বিরোধী অপশক্তিকে পুঁজি করে নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে নৌকার নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগন শঙ্কিত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরী এমপি হওয়ার পর দীর্ঘ ১০ টি বছর যাবত প্রতিটি ইউনিয়নে নৌকার সমর্থক নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরীর সমর্থকদের বিভিন্ন রোষানলের স্বীকার হচ্ছেন।

নৌকার সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুরসহ বিভিন্নভাবে হামলা ও মামলার স্বীকার হয়েছেন তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিরা জানান, ফরিদপুর-৪ আসনে গত দুইবার সংসদ নির্বাচনে ভোট কারসাজির মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ে ভোট কেন্দ্রগুলি দখল ও নৌকার লোকজনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রকাশ্যে ভোট নিয়ে নৌকাকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী এমপি হয়েছেন। তাই, ফরিদপুর-৪ আসনের ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রের তালিকাসহ ও ওই সমস্ত কেন্দ্রে বিএনপি- জামায়াত ও উশৃঙ্খল-সন্ত্রাসী বাহিনীকে চিহ্নিত করে ভোট প্রদানের আগেই আইনের আওতায় আনতে হবে। ভোট কেন্দ্রগুলিতে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী হলে সাধারণ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আগ্রহী হবেন।

পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে, সাধারণ ভোটারগন ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ হারাবেন। তাই, আগামী ৭ জানুয়ারী অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আন্তরিক হস্তক্ষেপসহ সজাগ ভুমিকা রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।