ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মুক্তিপণে ফিরলো টেকনাফে অপহৃত ১০ জন

কক্সবাজার অফিস :

কক্সবাজার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হোয়াইক্যং পাহাড়ে অপহৃত হওয়া ১০ জন কিশোর ও যুবককে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন স্বজনরা।

 

ফেরত আসা অপহৃতরা হলেন, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচিপাড়া এলাকার বেলালের দুই ছেলে জুনাইদ (১২) ও মোহাম্মদ নুর (১০), একই এলাকার লেদুর ছেলে শাকিল (১৫), শহর আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫), নুরুল ইসলামের ছেলে আকতার (২৫), নাজির হোসেনেন ছেলে ইসমাইল প্রকাশ সোনায়া (২৪) ও হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং এলাকার আলী আকবরের ছেলে ছৈয়দ হোছাইন বাবুল (২৬) ও কালা মিয়ার ছেলে ফজল কাদের (৪০)।

 

বুধবার (২৭ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পশ্চিমে পাহাড় থেকে তাদেরকে ফেরত আনা হয়। সেখান থেকে তাদের হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়।

 

ফেরত আসা শাকিলের পিতা লেদু মিয়া বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছেলে ফেরত দিয়েছে অপহরণকারীরা। কষ্টের সময় মানুষের কাছ থেকে ধার করে টাকা নিয়ে ছেলে অপহরণকারীর হাত থেকে ছেড়ে আনছি। ছেলের সাথে ১০ জন সবাই মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত এসেছে।

 

হোয়াইক্যং কানজর পাড়া এলাকার গ্রাম পুলিশ শেখ কবির জানান, সকালে ১০ জন কিশোর ও যুবক পাহাড়ে কাজ করতে যায়। অপহরণকারীরা তাদেরকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ১০ জনকে রৈক্ষ্যং ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করা নিয়ে আসে।

 

একই দিন সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং বাদিবন্যা পাহাড় থেকে ১০ জন কিশোর যুবক জঙ্গল ও গরু চরাতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয়।

 

হ্নীলা পানখালীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ হোসাইন জানান, চলতি মাসে অপহরণকারীর কবল থেকে দুই ইউনিয়ন হ্নীলা-হোয়াইক্যংয়ের মোট ২৫ জন মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছে। ঈদ পর্যন্ত কতজনকে মুক্তিপণ দিতে হয় আল্লাহ মালুম!

 

হ্নীলা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ ছাত্র ফাহিম সাইদি আরকান জানান, টেকনাফে হ্নীলা মানুষের দিন-রাত কাটছে কষ্টের মাঝে, একদিকে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে পর পর বিকট শব্দ অন্যদিকে পাহাড়ের ডাকাত একের পর এক অপহরণের মুক্তিপণ ছাড়া কেউ ছাড় পাচ্ছে না।

 

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, ২০১৭ সালে যখন ১২ লাখ অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশ এসেছে এরপর থেকে খুন অপহরণ বেড়ে গেছে। আমাদের ইউনিয়ন মধ্যে অসহায় মানুষের জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র উপায় নাফনদী, পাহাড় কৃষি চাষ ও ক্ষেত খামার। অপহরণের কারণে পাহাড়ে যেতেও পারছে না কেউ, নাফনদীও বন্ধ।