নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তিন বছরের পরিবর্তে ৬ বছরের জন্য বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে(ইইউ) আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস বাণিজ্য সুবিধা প্রদানেরও অনুরোধ জানান তিনি। মঙ্গলবার বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সফরের প্রথম দিন ইউরোপীয় কমিশনের বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক হয়। তিনি ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের অংশীদারিত্বের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আগামীতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অবরোধ ও পাল্টা অবরোধের কারণে অর্থনৈতিক অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশসহ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশ। এসব দেশকে এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তিন বছরের পরিবর্তে ৬ বছরের জন্য বাণিজ্য সুবিধা ২০৩২ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে ইউরোপের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছি।
বৈঠকে ইইউ দেশগুলোকে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আইসিটিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বাণিজ্য সুবিধার বিষয়ে আরও আলোচনার বিষয়ে মত দেন। প্রসঙ্গত, গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
সফরকালে ২৫ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫ কোটি ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা, সাড়ে ৪ কোটি ইউরোর একটি অনুদান এবং একই খাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোর অনুদান চুক্তি সই হয়। এছাড়া সামাজিক খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ৭ কোটি ইউরোর আরও পাঁচটি অনুদান চুক্তি হয়। ২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তিনি। দুদিনের সফর শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।