ই-পেপার | বুধবার , ৩রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আর্থিক সঙ্কটে’ প্রিমিয়ার লিগে খেলছে না গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব

স্পোর্টস ডেস্ক :

 

আন্তর্জাতিক ফুটবলের ব্যস্ততার পরপরই আবারও আলোচনায় ঘরোয়া ফুটবল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের (বিপিএল) দলবদলের শেষ দিন আজ (বুধবার)। অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোকে আজই ফুটবলার নিবন্ধনের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। শেষ দিনে এবারের ফুটবল লিগ থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে নিয়েছে গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব।

 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় স্তর বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের রানার্স-আপ হয়ে প্রিমিয়ারে উঠেছিল গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব। দেশের ফুটবলের শীর্ষ স্তরে উঠেও না খেলার কারণ সম্পর্কে ক্লাবের ম্যানেজার এসএম মামুনুর রশিদ বলেন, ‘প্রিমিয়ারে খেলতে অনেক আর্থিক সামর্থ্যের প্রয়োজন। যা আমাদের জন্য এই মুহূর্তে বহন করা কষ্টকর। তাই আমরা প্রিমিয়ার লিগের পরিবর্তে বিসিএল (চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ) খেলার আগ্রহ প্রকাশ করে ফেডারেশনকে আজ চিঠি দিচ্ছি।’

 

প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে দল গঠনে যথেষ্ট ব্যয় হয়ে থাকে। প্রতি দলে ছয় জন বিদেশি নিবন্ধনেই লেগে যায় কয়েক কোটি টাকা। দেশি খেলোয়াড়, কোচ ও ক্যাম্প খরচ— সবমিলিয়ে ন্যূনতম ৫-৬ কোটি টাকা প্রয়োজন দেশের শীর্ষ পর্যায়ে লিগ খেলতে। এই মুহূর্তে সেটা জোগাড় করা কষ্টসাধ্যই গোপালগঞ্জ স্পোর্টিংয়ের জন্য। প্রিমিয়ার লিগে বড় অঙ্ক ব্যয় না করে সেই অর্থ দিয়ে গোপালগঞ্জ ক্লাবের অবকাঠামো তৈরিতে মনোযোগ দেবে বলে জানা গেছে।

 

আগামী ১ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে দলবদলের কার্যক্রম। আড়াই মাস পর আজ শেষদিনে এসে ম্যানেজার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘আসলে আমাদের এই সিদ্ধান্ত কয়েকদিন আগেই নেওয়া। ক্লাব সভাপতি সম্প্রতি বিদেশ সফরে ছিলেন, পাশাপাশি অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানাতে খানিকটা বিলম্ব হয়েছে।’

 

প্রিমিয়ারে খেলতে অনেক আর্থিক সামর্থ্যের প্রয়োজন। যা আমাদের জন্য এই মুহূর্তে বহন করা কষ্টকর। তাই আমরা প্রিমিয়ার লিগের পরিবর্তে বিসিএল (চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ) খেলার আগ্রহ প্রকাশ করে ফেডারেশনকে আজ চিঠি দিচ্ছি। এসএম মামুনুর রশিদ, গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যানেজার

 

গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের কোচ ছিলেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার সাইফুর রহমান মনি। দলকে প্রিমিয়ারে উঠিয়েও নিজে কোচিং না করাতে পারার চেয়ে ফুটবলারদের জন্যই বেশি বেদনা তার কণ্ঠে, ‘গতকাল ক্লাব থেকে আমাকে জানানো হয়েছে লিগে অংশগ্রহণ করবে না। শেষ মুহূর্তে এমন সিদ্ধান্তে অনেক খেলোয়াড়ই সমস্যায় পড়বে। অনেকেই আশায় ছিল তারা প্রিমিয়ার লিগ খেলবে। সেটা আর হচ্ছে না।’ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে প্রিমিয়ারে উঠেও না খেলার আরও নজির রয়েছে। কক্স সিটি, ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স প্রিমিয়ারে উঠেও আর্থিক সঙ্কটের জন্যই মূলত অংশগ্রহণ করেনি।

 

আড়াই মাস পর আজ শেষদিনে এসে ম্যানেজার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘আসলে আমাদের এই সিদ্ধান্ত কয়েকদিন আগেই নেওয়া। ক্লাব সভাপতি সম্প্রতি বিদেশ সফরে ছিলেন, পাশাপাশি অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানাতে খানিকটা বিলম্ব হয়েছে।’গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব শেষ মুহূর্তে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এখন লিগে দল সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে দশে। প্রিমিয়ার লিগের নিয়মিত দল চট্টগ্রাম আবাহনীও লিগে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত পরশু রাতে অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে। চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যানেজার আরমান আজিজ এখন খেলোয়াড় সংগ্রহে দিন-রাত দৌড়ঝাপ করছেন। চলমান মৌসুমের দলবদলে শুধুমাত্র বসুন্ধরা কিংস ও পুলিশ ফুটবল ক্লাব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে। বাকি ক্লাবগুলোকে আজকের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে প্রিমিয়ারে ওঠা ক্লাবগুলো টিকছে না। স্বাধীনতা সংঘ, আজমপুর এফসি এক মৌসুম খেলেই অবনমিত হয়েছে। উঠেও খেলছে না গোপালগঞ্জ।

 

এক মৌসুম আগে লিগে তৃতীয় হয়েও সাইফ স্পোর্টিং ফুটবল থেকে সরে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানোয় বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা করেছিল ফেডারেশন। গোপালগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের ক্ষেত্রে কেমন পদক্ষেপ নেয় দেশের ফুটবলের শীর্ষ সংস্থা— সেটাই এখন দেখার বিষয়। গত মৌসুমে রেলিগেশনে ছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। তারা অবনমন না দেওয়ার নানা অনুরোধ করলেও ফেডারেশন তা মানেনি। গোপালগঞ্জ না খেলায় মুক্তিযোদ্ধার আবেদনের বিষয়টি আবার আলোচনায় আসছে। যদিও এখন আর নতুন দল অর্ন্তভূক্তির সুযোগ নেই।

 

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪