ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সৎ-কর্মঠ ও নিরহংকারী ব্যক্তিত্ব ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ

একজন সৎ, কর্মঠ, নিরহংকারী, দক্ষ ও মানবিক পুলিশ অফিসার হিসেবে ইতোমধ্যে যিনি ময়মনসিংহের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মাছুম আহমদ ভূঞা।

 

তিনি ময়মনসিংহে যোগদান করেছেন ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট। একের পর এক ধারাবাহিক সফলতার বদৌলতে মাত্র এক বছরেই অর্জন করেছেন আকাশসম জনপ্রিয়তা। কর্মগুণে আলো ছড়ানো জেলা পুলিশের এ সর্বোচ্চ অভিভাবক দলমত, ধর্শ,বর্ণ ও পেশার নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। শতভাগ সৎকর্ম অন্তপ্রাণ, অক্লান্ত পরিশ্রমী ও  দুঃসাহসিক এই পুলিশ কর্মকর্তা এ যাবৎকালের সর্বাধিক জনপ্রিয় পুলিশ সুপার হিসেবেও সর্বজন স্বীকৃত।

 

সময়ের আলোচিত ও আতঙ্কিত জনপদ ময়মনসিংহে যোগদান করেই ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে ক্রসেড ঘোষণা করেন তিনি। অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েই মাঠে নেমেছিলেন সাম্যবাদ অগ্রদুত অসাম্প্রদায়িক নীতির এই খাঁটি বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা অন্তপ্রাণ পুলিশ কর্মকর্তা মাছুম আহাম্মেদ ভুঞা। তাঁর হাত ধরেই সাধিত হয়েছিলো আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিাতির আমুল উন্নয়ন। ঘুষের প্রথা বন্ধ করে পুলিশকেও গড়ে তুলেছেন মানবিক পুলিশ হিসেবে। পুলিশ কর্তৃক সাধারণ জনগণ হয়রানির চিরাচরিত প্রথাও বন্ধ হয়েছে তাঁর হাত ধরে।

 

নাগরিক সেবা, যানজট নিরসন আর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন তিনি। বদলে দিয়েছেন ক্রাইমজোন খ্যাত দেশের বহুল আলোচিত জনপদ ময়মনসিংহের চালচিত্র। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাদাঁবাজিসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধ দমনেও নজির সৃষ্টি করেছেন। মাদক নির্মূল, অস্ত্র উদ্ধার, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, চাঞ্চল্যকর মামলার রহস‍্য উদঘাটনেও প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।  কমিনিউটি পুলিশের কার্যক্রমকেও করেছেন গতিশীল। পুলিশ সদস্য ছাড়াও কারও আপদে বিপদে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে নিজের সবটুকু দিয়েও সহায়তা করে থাকেন তিনি। অনেকেই তাঁকে বাংলাদেশ পুলিশের রত্ন হিসেবে অখ্যায়িত করেন। সবার প্রত্যাশা, দেশের প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি দফতরে অন্যায়ের সাথে আপোষহীন এসপি মাছুম আহম্মেদ ভুঞার মতো এমন দুঃসাহসিক পুলিশ অফিসার হলে দেশের সর্বত্রই দুর্নীতি চিরতরে রোধ হবে।

 

জেলা পুলিশ, রেঞ্জ পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটার অনলাইনসহ জনপ্রিয় সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কর্মগুণের প্রশংসা করে শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে দেয়া নানা পেশাজীবি অগণিত মানুষের স্ট্যাটাস নজর কেড়েছে ময়মনসিংহবাসীর।

 

জেলা পুলিশের সকল অফিসার-ফোর্সের পক্ষ থেকে দেয়া প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের স্ট্যাটাসে লিখেছেন,

চিত্ত যেথা শঙ্কাহীন, লক্ষ্য যেথা স্থির,
বর্ষপূর্তির শুভক্ষণে, সালাম হে কর্মবীর..”

 

পুলিশ ও সেবা শিরোনামে ময়মনসিংহে এসপি মাছুম আহাম্মেদ ভুঞাকে নিয়ে মজিবুর রহমান মিন্টু নামের এক বিশিষ্ট নাগরিক তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমার দেখা ৫০ বছরের পুলিশ! পুরনো পুলিশের ইতিবৃত্ত বাদ দিলাম। ময়মনসিংহে রেঞ্জ স্থাপনের পর আমি পুলিশ বাহিনী ও পুলিশী সেবায় এক বিরাট বিপ্লব দেখেছি। জনগণের পুলিশ কথাটি এখন সার্বিকভাবে পাকাপোক্ত। পুলিশ এখন অনেক জনবান্ধব। (তবে অন্যান্য পেশাজীবীদের মত পুলিশ বাহিনীতেও কিছু খারাপ, দূর্নীতিবাজ ও অযোগ্য পুলিশ আছে, তাঁদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে দিনদিন) এসপি মাছুম আহমেদ ভূঁইয়া। এমন নিরহংকার, সাদাসিধা, সদালাপী,মানবিক ও জনবান্ধব পুলিশ অফিসার খুব কমই দেখা যায়। পুলিশী সেবা ও এসপি মাছুম আহমেদের মানবিক দায়িত্বের বিষয়টি আমাকে গর্বিত করেছে। সাবাশ বাংলাদেশ পুলিশ।

 

রিমন আহম্মেদ নামে একজন ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে লিখেছেন, এতো সৎ, অক্লান্ত পরিশ্রমী ও জনবান্ধব এসপি আমি খুব কমই দেখেছি। অপরাধীদের আতঙ্ক এসপি মাছুম স্যারের জন্য দোয়া ও শুভ কামনা।

 

জানা যায়, ২০২২ সালের এই দিনে মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, পিপিএম জয়পুরহাট জেলা থেকে ময়মনসিংহ জেলার ১১৯ তম পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে পূর্ববর্তী কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করার পর দেশের অন্যতম বৃহত্তম এবং সদ্য বিভাগীয় শহর হিসেবে আবির্ভূত ময়মনসিংহ জেলার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমেই তিনি জেলা পুলিশের প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যাপারে উদ্যোগী হন। সমকালীন সমাজের বহুবিধ অপরাধপ্রবণতা ও সমস্যাবলী চিহ্নিত করা ও সেগুলোর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখার স্বার্থে জেলা পুলিশের প্রতিটি সদস্যের শৃঙ্খলা, ভাতৃত্ববোধ, মনোবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি কল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। আইন শৃংখলার উন্নয়নের পাশাপাশি ময়মনসিংহ নগরীরর যানজট নিরসনে শহরের প্রধান প্রধান সড়কের দুপাশে নির্মিত তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন।

 

ময়মনসিংহের কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ, জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি’র ওসি ফারুক হোসেনসহ জেলা পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে এসপি মাছুমের দায়িত্ব পালনের এক বছর কেমন কেটেছে জানতে চাইলে তারা জানান, তিনি নিজে ঘুষ নেননা। পুলিশের কেউ ঘুষ গ্রহণ করলে তাকেও ছাড় দেননা। এখন ময়মনসিংহের সব থানার পুলিশকে শুধু বেতনের টাকায় চলতে হয়। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এসপি মাছুম আহমেদ সার্বক্ষনিক সজাগ দৃষ্টি রাখেন। জেলার সবকটি সার্কেল অফিস, থানা, ফাঁড়িসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন- যেকোনো গুরুতর ও জটিল বা সন্দেহজনক পরিস্থিতির আভাস পাওয়া গেলে দিবারাত্রি যে কোনো সময় তাৎক্ষনিক এসপিকে জানাতে হবে। আমরাও সার্বক্ষনিক আতঙ্কে ও সতর্ক থাকি। আমরা সত্যিই গর্বিত যে সৎ পথে থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারছি। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন আলাদা পয়সা উপার্জন করা একেবারেই বন্ধ। তবুও আক্ষেপ নেই। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রমী কর্ম অন্ততপ্রান মানুষ। এসপি মাছুম আহম্মেদ ভুঞা সত্যিকারে বাংলাদেশ পুলিশ রত্ন।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪