
আমিনুল ইসলাম, টাঙ্গাইল
গত কয়েক সপ্তাহে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার চিতুলিয়া পাড়া, মাটিকাটা ও পাটিতাপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে দেখা দিয়েছে যমুনার তীব্র ভাঙন। ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা। অব্যাহত ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধনসহ সড়ক অবরোধ করে নদী ভাঙন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগষ্ট) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়কের মাটিকাটা মোড় এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। ভাঙন কবলিত এলাকার শত শত নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজসহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশ নেন। অবরোধের কারণে উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বেলাল হোসেন। তিনি ভাঙন রোধে আরো দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ থেকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর যমুনা পূর্ব পাড়ে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনে গিলে খাচ্ছে বসতভিটা ও ফসলি জমি। ইতিমধ্যে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে শতাধিক পরিবার। প্রতিদিন পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়া পাড়া, মাটিকাটা ও পাটিতাপাড়া সহ বেশ কিছু এলাকার ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলাসহ স্থায়ী বাঁধ না দিলে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল সহ শত শত ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
চিতুলীয়াপাড়া গ্রামের বসতভিটা ও ফসলি জমি হারানো সোহরাব আলী বলেন, গত দুই থেকে এই এলাকায় যমুনার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে আমার বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমি পরিবার নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
একই গ্রামের শাহজামাল বলেন, নদী ভাঙনের কারণে এ পর্যন্ত আমি কয়েকবার আমার বসতভিটা হারিয়েছি। এবারের ভাঙনেও আমার বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন আর আমার বসতি গড়ে তোলার কোনো জমিজমা নাই। পরিবার নিয়ে কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না।
কোনাবাড়ি মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মিন্টু মিয়া বলেন- গত কয়েক বছরে আমাদের এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। চলতি বছরেও ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধ শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের মাদ্রাসায় আস্তে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জিওব্যাগ ফেলা না হলে ও স্থায়ী বাঁধ না দিলে স্কুল মাদ্রাসা সহ কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এবিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, ভাঙন ঠেকাতে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। এর আগেও জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকায় যাতে আরো দ্রুত জিওব্যাগ ফেলা যায় সে ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নদী ভাঙনে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে তাদের তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।