মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ,ময়মনসিংহ:
সারাদেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে সৃষ্ট অতিষ্ঠ গরম থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টি চেয়ে দেশজুড়ে ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে। বৃষ্টির কামনায় দু-হাত তুলে কান্নায় চোখ ভাসিয়েছেন অনেকেই। তবে এ মুহূর্তে বৃষ্টি চাইছেন না ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ধানচাষিরা।
মাঠে সোনালি ফসল। সে ফসল ঘরে তোলার পর বৃষ্টি এলেই ভালো- মন্তব্য কৃষকদের। আরও দুই সপ্তাহ বৃষ্টিহীন থাকুক- এমনটাই চান ধান চাষিরা। এমন দাবদাহে কষ্টের বদলে এক ধরনের স্বস্তি আছে তাদের মাঝে।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৯০ ভাগ ধান পেকে গেছে। শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা-মাড়াই। আবার কোথাও আধা পাকা ধান দুলছে জমিতে। পুরোদমে ধান কাটা-মাড়া শুরু হতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। তাই ফসল ঘরে তোলার পর বৃষ্টি এলেই ভালো তাদের জন্য।
বৃহস্পতিবার (০২ মে ২০২৪) তারিখে সরেজমিনে গিয়ে পুরো উপজেলা ঘুরে দেখা যায়- তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেই মাঠে ধান কাটছেন কৃষকরা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। তীব্র রোদ, ভ্যাপসা গরম কিছুই তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারছে না। ঘাম ঝরিয়ে ফলানো ফসল ঘরে তুলতে না হয় আরেকটু বেশি ঘাম ঝরাবেন। তবুও বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি চান না ময়মনসিংহের কৃষকরা।
ধানচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় এখনো পর্যন্ত ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা । এমন অবস্থায় বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি হলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এ ছাড়াও এ সময় একটু বৃষ্টি হলে নিচু এলাকার জমিতে পানি জমে যাবে। এ ছাড়াও ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত শ্রমিক, সার, কীটনাশক ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায়, বেড়েছে উৎপাদন খরচ। তাই সব মিলিয়ে রোদ আর গরম যত বেশিই হোক, কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারলেই খুশি তারা। এ জন্য আরও প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এমন আবহাওয়া চান তারা।
বোররচর ইউনিয়নের কৃষক রব্বানী মিয়া সিএনএন বাংলা২৪কে বলেন, আমরা এবার অনেক খুশি ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। অন্যবার বন্যা-বৃষ্টির চোখ রাঙানি থাকত, কিন্তু এবার কিছুই নেই। আবহাওয়া আমাদের পক্ষে। এখন গরম লাগছে কিন্তু আমাদের ধানের জন্য ভালো। ধানগুলো পরিপূর্ণভাবে শুকিয়ে গোলায় তুলতে পারব। অন্য বছর ধান কাটার পর বৃষ্টি হতো বা ধান কাটতে হতো বৃষ্টিতে ভিজে, কিন্তু এ বছর বৃষ্টি নেই। আমরা চাই আরও কয়েকটা দিন এভাবে গেলে আমরা ধান শুকিয়ে ফেলতে পারব। এখন গরম লাগলেও বৃষ্টি চাই না আমরা।
সিরতা ইউনিয়নের কালাম মিয়া গ্রামের কৃষক বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান ভালোই হয়েছে। তাই রোদ বা গরমে এখন আমাদের সমস্যাই না। তবে এখন বৃষ্টি হলে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই যে রকম আবহাওয়া আছে এ রকম আরও বেশকিছু দিন থাকলেও আমাদের জন্য ভালো।