ই-পেপার | বুধবার , ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ির ৬ ব্যাংকে আতংক নিরাপত্তা জোরদার,

মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু,

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনার জেরে নাইক্ষ্যংছড়ির ৬ ব্যাংকে আতংক ছড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

 

বুধবার ( ৩ এপ্রিল) উপজেলা সদর ও বাইশারীতে থাকা ৬ টি শাখা ও উপশাখা ব্যাংক ব্যবস্থাপক ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপকালে এসব তথ্য জানা যায়। ব্যাংক গুলো হলো: সোনালী ব্যাংক,জনতা ব্যাংক কৃষি ব্যাংক ২ টি। আ৷র উপশাখা ২ এবং অন্যান্য এজেন্ট ব্যাংক ব্যাংকিং ৩ টা।

 

নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মমতাজ মিয়া জানান,বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনার জেরে তারা চরম আতংকে। কেননা আগের সবগুলো ব্যাংকের অবস্থান ছিলো উপজেলা সদরে। তবুও ডাকাতী ঘটনা ঘঠায় তিনি এ আতংকগ্রস্থ হন। তবে সজাগ রয়েছেন।

 

পুলিশের কাছ থেকে সহায়তা চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন বুধবার দুপুরে।

 

তিনি আরো বলেন, পরপর ২ টি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার খবর পেয়ে তার অফিসে ছুটে আসেন তার উধ্বর্তন কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে অন্যতম জনতা ব্যাংক ককসবাজার এরিয়া ম্যানেজার অলক বড়ুয়া। এরিয়া ম্যানেজার অলক বড়ুয়া এ প্রতিবেদককে বলেন,পাহাড়ী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতীর ঘটনা পাহাড়ের ব্যাংকিং সেক্টরকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।

 

সবাই আতংকে। সে কারণে নাইক্ষ্যংছড়ির তাদের ব্রাঞ্চটি দেখতে তিনি ছুটে আসেন ককসবাজার থেকে আর প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন ব্যাংকের সর্বস্থরের কর্মকর্তাদেরকে।

 

নাইক্ষ্যংছড়ি সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হোছাইন মাজমুদ আরাফাত এ প্রতিবেদককে বলেন,হঠাৎ এমন ঘটনার জন্যে কেউ প্রস্তুত ছিলো না। পাহাড়ে ব্যাংক সেক্টেরে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

 

তবে তিনি তার উর্ধ্ব মহলের দেয়া নির্দেশনা মোতাবেক সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছেন। এখন নিরাপদ। পুলিশ পাহারা রয়েছে।
কৃষি ও জনতা ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক যথাক্রমে নুরুল হাকিম ও নাছিমা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন,রুমা ও থানছিতে ডাকাতির ঘটনার পর নাইক্ষ্যংছড়িতে ব্যাংক গুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার কারণে তারা দুপুর দেড় টার পর ব্যাংকে এসে টাকা তুলতে পারেনি। ব্যাংকের দরজা দেড়টার পর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়। অথচ রমজানে ব্যাংকের টাকা লেদ-দেনের সময় দুপুর আড়াই টা পর্যন্ত খোলা রাখা কথা। তবে জনতা ব্যাংক ব্যবস্থাপক মমতাজ মিয়া এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

 

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন,উপজেলায় যে’ কটি শাখা-উপশাখা,এটিএম ও এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে সবটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশী অতিরিক্ত টহলেও আছে। এখন পর্যন্ত সব প্রতিষ্ঠান নিরাপদ ও অক্ষত রয়েছে।

 

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, রুমা – থানছিতে ডাকাতি ঘটনার পর ব্যাংক সেক্টরসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের জন্যে তিনি জরুরী বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। নিরাপত্তা,সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের । তিনি সরেজমিন গিয়ে এসব করেছেন। এখন সবাই সজাগ।

 

বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে বান্দরবানের থানছিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে এ ডাকাতি করে টাকা লুট করে স্বশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।

 

এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে লুট করে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র এ সন্ত্রাসীরা ।

 

এ সময় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র, মোবাইল, ব্যাংকের ভোল্টের সব টাকাসহ ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর এ সদস্যরা। যাকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলার বাহিনী।