শেখ আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, একটি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ আজকে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। দেশে বিদেশে সবার মধ্যে একটি প্রশ্ন বাংলাদেশ কোথায় আছে? এটি নিয়ে একটি বড় সংশয় কাজ করছে। আমি বলতে চাই, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। ৭ জানুয়ারি তো কোনো নির্বাচন হয়নি, হয়েছে গণভোট। বিএনপির পক্ষ থেকে ডাক দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ যাতে নির্বাচনে না যায়। সেদিন বাংলাদেশের ৯৫ ভাগের বেশি মানুষ নির্বাচনে না গিয়ে গণভোটে শেখ হাসিনার নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রত্যাখান করেছে। আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরা ছাড়া সবাই সরকারের বিপক্ষে কথা বলছে। সুতরাং এ গণভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ তাদের অবস্থান আবার পরিষ্কার করেছে। তারা এ ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে চায়। তারা তাদের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। গণমাধ্যমের অধিকার ফিরে পেতে চায়। ৯৫ ভাগের বেশি মানুষ সেদিন জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পাঁচ শতাংশেরও কম মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি সোমবার (১ এপ্রিল) বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর ২ নং গেইটস্থ নাসিরাবাদ কনভেনশন হলে (সমাবেশ ক্লাব) পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) চট্টগ্রাম শাখার চিকিৎসক সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিকের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়েজুর রহমানের পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সি. সহ সভাপতি ডা. আবদুল সেলিম, সহ সভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন ডাম্বেল।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। ৭ তারিখের পরের অবস্থা হলো এটা। ৯৫ শতাংশ মানুষ এই নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে। নির্বাচন হয়নি কিন্তু। নির্বাচনের ব্যবস্থাকে প্রত্যাখান করেছে মানুষ। অথচ এই নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়ার জন্য, অসহায় সু্বিধাভোগীদের সবকিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে শুধু রাজনৈতিক দলের ঐক্য ঘটেনি, ৯৫ শতাংশ বাংলাদেশের মানুষের ঐক্য ঘটেছে। সুশীল সমাজ, যারা আগে মুখ খুলত না, তারাও পরিস্কার ভাষায় এ অবৈধ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে, তারা আজ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলছে। পেশাজীবীরা বলছে, এমনকি গণমাধ্যম যারা আছে, যারা যারা শুধু শেখ হাসিনার সুবিধাপ্রাপ্ত গণমাধ্যম, তার বাইরের গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমের কর্মীরাও প্রত্যাখান করেছে। তারাও আজ গণতন্ত্রের পক্ষে রায় দিয়েছে। তারাও এই রেজিমের বিপক্ষে কথা বলছে। তারাও আজ বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য এ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে। আগামীদিনে মুক্ত গণমাধ্যমের অপেক্ষায় তারা আছে।
প্রধান বক্তা ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, বাংলাদেশ কঠিন এক ক্রান্তি কাল অতিক্রম করছে। দেশে আইনের শাসন নেই। মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। পবিত্র রমজান মাসে ইফতার আয়োজন করতে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। সামনে হয়তো এমন দিন আসবে যেদিন মসজিদে আজান দিতে সরকারের অনুমতি নিতে হবে।
বিশেষ অতিথি আবুল হাশেম বক্কর বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়না। সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে কিন্তু সার্বিকভাবে কখনোই ব্যর্থ হয় নাই। জনগণের আন্দোলনের মুখে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার টিকে থাকতে পারে নাই। এই সরকারকেও যেতে হবে।
এতে বক্তব্য রাখেন মেডিকেল কলেজ ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, মহানগর ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দীন, ড্যাবের উপদেষ্টা ডা. আবদুল আলিম, ডা. আবুল কালাম, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, কেন্দ্রীয় ড্যাবের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সরোয়ার আলম, ড্যাব নেতা ডা. নুরুল করিম চৌধুরী, ডা. মিনহাজুল আলম, ডা. মঈনউদ্দীন, ডা. জোনায়েদ রায়হান, ডা. মেহেদী হাসান, ডা. সাদ্দাম হোসেন, ডা. গিয়াস উদ্দিন নয়ন প্রমূখ।