ই-পেপার | শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রবাসী মোকতারের বিয়ে প্রতারণা 

এমকে আলম চৌধুরী :

 

মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মির মো: মোকতার (৪২)। বিয়ে করাই যার নেশা। বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে, ছলনা-প্রতারণা ও বিভিন্ন কূটকৌশলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে করেছেন একাধিক বিয়ে। টার্গেট তার ধনাঢ্য পরিবারের মেয়ে কিংবা চাকরিজীবী পাত্রী। যাতে বিভিন্ন অজুহাতে হাতিয়ে নেওয়া যায় অর্থকড়ি। অতি ধুরন্ধর এই মোকতারের  বিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন একাধিক নারী।
কে এই মোকতার: 
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হরিনখাইন ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মির আহমদ ও নুরজাহান বেগমের পুত্র। চার ভাই, দুই বোনের মধ্যে মোক্তার সেজো। বড় ভাই নুরুল আবছার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, একজন জারিকারক। মেজ ভাই আক্তার ব্যবসায়ী। ছোট ভাই জহিরুল ইসলাম টিটু সিলেটের গোয়ালাবাজার শাখা ইসলামি ব্যাংকে কর্মরত। এই সুবাধে মোকতার কখনো কখনো নিজেকে ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দেন বিয়ের বাজারে। যদিও তার পড়ালেখার পরিধি খুব বেশি নয়।
প্রথম বিয়ে ও ঘরজামাই: 
মোকতার শুরুতে বিয়ে করেন চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া এলাকার কেবি আমান আলি সড়কের শাহসুফি আবদুল মজিদ বাড়ির (কাজি বাড়ি) ফরিদ আহমদ ও খোরশিদা বেগমের মেয়ে সোনিয়া আক্তারকে। দরিদ্র ঘরের সন্তান মোকতার বিয়ের পরে স্ত্রীকে নিয়ে সিংহভাগ থাকেন স্ত্রীর বাবার বাড়িতে। এই ঘরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া সুবাইদা ও সুমাইয়া নামের দুটি মেয়ে রয়েছে তার। যদিও বর্তমানে এদের তেমন একটা খোঁজখবর রাখেন না মোকতার। কখনো কখনো তাদেরকে নিজের মেয়ে বলে পরিচয়ই দেননা, যাতে অন্যত্র বিয়ে করতে বেগ পেতে না হয়।

 

স্ত্রীর টাকায় বিদেশ: 
হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মোকতার চট্টগ্রাম নগরীতে গিয়ে মোটামুটি অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে সোনিয়াকে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই চাপ দিতে থাকে তাকে বিদেশে পাঠানোর। স্ত্রী সোনিয়াও স্বামীর মন রক্ষায় এবং সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে বাবার বাড়ির অর্থায়নে স্বামী মোকতারকে সৌদি আরবে পাঠান। সেখানে খুব একটা সুবিধা করতে না পারায় মোকতার আবারও দেশে ফেরত আসেন। দেশে ফিরে কপর্দকহীন মোকতারের আবারও ঠাঁই হয় শ্বশুরবাড়িতে, ঘরজামাই হিসেবে।

 

টাকার নেশায় সোনার হরিণ শিকার: 
সৌদি আরব থেকে শূন্য হাতে ফেরা মোকতার চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া এলাকার কেবি আমান আলি রোডে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে থাকাকালে আরও বেশি অর্থকষ্টে ভুগতে থাকেন। এসময় তিনি পয়সাওয়ালা ডিভোর্সি কিংবা চাকরিজীবী নারী খুঁজতে থাকেন, বিয়ে করার জন্য। একসময় পেয়েও যান তেমন একজন সোনার হরিণ। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে এসে বিভিন্ন ছলনা-প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জান্নাত নামে এক সরকারি চাকরিজীবী নারীকে বিয়ে করে ফেলেন নানা প্রলোভনে ফেলে।

 

নাটক সাজিয়ে বিয়ে: 
কক্সবাজার শহরের একটি বনেদি পরিবারের পিতৃহীন মেয়ে জান্নাত। পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করেন সরকারি একটি দপ্তরে। মোকতারের কথিত আত্মীয়া আফরোজা বেগম পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে জান্নাতের পরিবারকে বিয়েতে রাজি করান।

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ক্লাসপাড়ার দলিলুর রহমানের স্ত্রী এই আফরোজা কনের পরিবারকে জানান, মোকতার একজন ব্যাংকার। চট্টগ্রামের সম্ভ্রান্ত ও ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান বলেও দাবি করেন তিনি।

এসময় দাবি করা হয়- মোকতারের স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। ওই সংসারে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে, যেটি নানির কাছে লালিতপালিত হচ্ছে।

 

মোকতারের সাজানো এসব কল্পকাহিনির সূত্র ধরে ২০২১ সালের প্রথম দিকে তার সাথে ১৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে জান্নাতের বিয়ে সম্পাদিত হয়। রামু উপজেলার কাজি মুহাম্মদ আলি এই বিয়ের নিকাহনামা রেজিস্ট্রি করেন।

 

মুখোশ উম্মোচন: 
জান্নাতের সাথে বিয়ের মাসখানেকের মধ্যেই প্রতারক মোকতারের মুখোশ উন্মোচন হতে শুরু করে। তিনি সরকারি চাকরিজীবী স্ত্রীকে সোনার ডিমপাড়া হাঁস মনে করে সংসারের যাবতীয় বোঝা তার উপর তুলে দেন। এমনকি নিজের নিত্যদিনের খরচের টাকাও স্ত্রীর নিকট থেকে দাবি করা শুরু করেন। এ নিয়ে সংসারে অশান্তির দানা বাঁধতে থাকে। ভরণপোষণ না দিয়ে নিজেই স্ত্রীর বাবার বাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে থাকা শুরু করেন মোকতার। একপর্যায়ে ব্যবসা কিংবা আবারও বিদেশে যাওয়ার কথা বলে স্ত্রী জান্নাতের নিকট মোটা অংকের টাকা দাবি করে বসেন মোকতার। যেটিতে জান্নাত কিংবা তার পরিবারের কারও সায় ছিলোনা।

 

শূন্য মোহরানায় বিচ্ছেদ: 
বিয়ের ক’মাস যেতেই প্রতারক মোকতারের মুখোশ একের পর এক উন্মোচন হতে থাকে। টাকা না দিলে তিনি জান্নাতের সাথে সংসার করতে চাননা বলে একটা সময় সাফ জানিয়ে দেন। ইত্যবসরে জান্নাতেরও বোধোদয় হয়, মোকতারকে সঙ্গী করে সংসার জীবনের পথ বেশিদূর পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে যান। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ কক্সবাজার পৌরসভার ৭-৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজি গিয়াস উদ্দিনের অফিসে মোকতার-জান্নাতের বিয়ে বিচ্ছেদ সম্পাদিত হয়। তবে এসময় জান্নাতের দেনমোহরের ১৫ লাখ টাকার মধ্যে এক টাকাও পরিশোধ করেননি মোকতার।

বিচ্ছেদের পর অপহরণ: 
বিয়ে বিচ্ছেদের পর মোকতার আবারও জান্নাতকে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেন। গেল বছরের নভেম্বরে অফিস থেকে ফেরার পথে কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল রাস্তার মাথায় মোকতার সদলবলে গিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে জান্নাতকে অপহরণের চেষ্টা চালান। তখন জান্নাতের শোর-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে তারা সটকে পড়েন। এই ঘটনায় জান্নাত বাদি হয়ে অভিযুক্ত মোকতারের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলমগির ঘটনার সত্যতা পেয়ে মোকতারকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে মুসলেকা দিয়ে রাত দুটোয় থানা থেকে ছাড়া পান মোক্তার।

 

ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার: 
সাবেক স্ত্রী জান্নাতকে কোনোভাবেই বাগে আনতে না পেরে মোকতার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। তিনি জান্নাতের নাম ও ছবি ব্যবহার করে ফেসবুক আইডি খুলে বসেন। ওই আইডি থেকে একের পর এক জান্নাতের ছবি এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অশ্লীল ও অরুচিকর কথাবার্তা লিখতে থাকেন। এমনকি তাদের দাম্পত্য জীবন চলাকালে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে উঠানো বিভিন্ন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা: 
বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা ও অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ঘটনায় সাবেক স্বামী মোকতারের বিরুদ্ধে জান্নাত নিজে বাদি হয়ে চট্টগ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিশেষ আদালতে মামলা (৮৩/২০২২) দায়ের করেন। পরে সেটি তদন্তের জন্য ঢাকায় সিআইডির সদর দপ্তরে পাঠানো হলে অভিযোগের সত্যতা পায় ও মোকতারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।

বিদেশে পলায়ন ও অপপ্রচার:  
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হলে আসামি মোকতার গ্রেপ্তার এড়াতে দ্রুত দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে তিনি Sharmin Begum (শারমিন বেগম) নাম দিয়ে আরেকটি ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার চালাতে থাকেন। এই আইডি থেকে তিনি শুধু সাবেক স্ত্রী জান্নাতের বিরুদ্ধে নয়, সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। একের পর এক লিখছেন পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধেও।

 

প্রতারক মোকতারের স্বজনদের ভাষ্য: 
মুঠোফোনে কথা হয় মোকতারের চাচা নুর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মোকতার কক্সবাজারে গিয়ে বিয়ের নামে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অসহায় জান্নাতের সাথে যা করেছে তার সবটাই অন্যায়’।

ভাই মোকতারের নানান অপকর্ম ও প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন তার ছোটভাই জহিরুল ইসলাম টিটু। তিনি ইসলামি ব্যাংকের সিলেটের গোয়ালাবাজার শাখায় কর্মরত। একপর্যায়ে তিনি অশ্রাব্য ভাষায় বলেন, ‘কুত্তা-কুত্তি অনেক কিছু করে, তাতে আমার বলার কিছুই নেই’।

একজন শিক্ষিত লোক ও ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও এমন নোংরা ভাষা তিনি ব্যবহার করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি টিটু। এছাড়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে জান্নাতকে বিয়ে ও বিচ্ছেদ এবং ফেক আইডি খুলে তাতে জান্নাতের ছবি প্রচারের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন তিনি।

মোকতারের স্ত্রী সোনিয়া যা বললেন:
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা হয় মোকতারের প্রথম স্ত্রী সোনিয়া আক্তারের সাথে। তিনি জানান, স্ত্রী ও দুই মেয়ের তথ্য গোপন করে মোকতার কক্সবাজারে গিয়ে জান্নাত নামের একজনকে বিয়ে করেন। জানাজানি হলে চাপের মুখে সেই নারীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। এই ঘটনার পরে মোকতার তাকে শারীরিকভাবে ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়ন চালান।
স্বামীর হাতে অমানুষিক নির্যাতন-নিপীড়নের বর্ণনা দিয়ে পিতৃ-মাতৃহীন সোনিয়া বলেন, ‘মোকতারের মারধোরে আমার পা ভেঙে যাওয়ায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। সেই সময়টাতে কক্সবাজারে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানের তথ্য গোপন করে জান্নাত নামের একজনকে বিয়ে করে। পরে মুখোশ উন্মোচিত হলে ওই নারীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়’।

জনপ্রতিনিধি যা বললেন: 
বহুল আলোচিত এই বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হরিনখাইন ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (এমইউপি) শওকতের সাথে। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘জান্নাত ও তার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি মোকতারের মা ও বড়ভাইকে জানানো হলে তারা কোনো দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। তারা বলেছিলেন- ‘মোকতার যেহেতু দেশে নেই, তাই তাদেরও কিছুই করার নেই’।

ভুক্তভোগী জান্নাতের বক্তব্য: 
মোকতারের নিপুণ প্রতারণার শিকার জান্নাত ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘পূর্বপরিচিত আফরোজা ও প্রতারক মোকতার বিভিন্ন ছলাকলা ও কূটকৌশলের মাধ্যমে নির্জলা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমার পরিবারকে বিয়েতে রাজি করান। কিন্তু বিয়ের ক’দিনের মাথায় শঠ ও ভন্ড মোকতারের মুখোশ উন্মোচন হয়। জানতে পারি- তার স্ত্রী ও একাধিক সন্তান রয়েছে। এছাড়া নিজেকে ব্যাংকার দাবি করে এবং আরও বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে অর্থকড়ির লোভে একাধিক বিয়ে করার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। পরে তাকে কাজি অফিসে ডেকে নিয়ে বিয়ে বিচ্ছেদে বাধ্য করি’।

ভুক্তভোগী জান্নাত বলেন, ‘বিয়ের পর মোকতার বৃহস্পতিবার রাতে আমার কাছে এসে দুইদিন থাকার পরে রোববার সকালে চলে যেতো। এতে করে সে বুঝাতে চাইতো- ব্যাংকে চাকরির সুবাধে অফিস সময়ে আসা-যাওয়া করছে। অথচ চাকরি করার মতো পড়ালেখা সে করেনি। তার পিতা হত্যামামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারেই মারা যায়। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় খুব একটা পড়াশোনার সুযোগ তার হয়নি। অথচ সে বেশভূষায় এমনভাবে চলাফেরা করে- যেনো অতি উচ্চ শিক্ষিত। মূলত: নারীদের তার প্রতারণার জালে আটকানোর জন্যই এটা সে করে থাকে’।

জান্নাত আরও বলেন, ‘বিচ্ছেদের পরে প্রতারক মোকতার বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে আবারও আমাকে বিয়ে করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। একপর্যায়ে আমি অফিস থেকে ফেরার পথে প্রকাশ্যে দিবালোকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। লোকজনের প্রতিরোধের মুখে তাতেও ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে’।

 

জান্নাত বলেন, ‘পরে মুক্তি পেয়ে মোকতার আমার ছবি ও নাম দিয়ে নিজে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে আমার বিভিন্ন ছবি ও আপত্তিজনক কথাবার্তা প্রচার করে। এবিষয়ে চট্টগ্রামে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করি। তদন্তে ওই মামলা সত্য প্রমাণিত হলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর গোপনে সংযুক্ত আরব আমিরাত পাড়ি জমায়’।

জান্নাত জানান, বিদেশে গিয়ে মোকতার Sharmin Begum (শারমিন বেগম) নাম দিয়ে ফেসবুকে আরেকটি ফেক আইডি খুলেন। ওই আইডি থেকে বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচারের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনী ও দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত দিচ্ছেন সরকারবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট।

সামগ্রিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মোকতারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ, বাংলাদেশে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যেসব গণমাধ্যমকর্মী কথা বলেছেন তাদের প্রত্যেককেই অভিযুক্ত মোকতার বিভিন্ন আপত্তিজনক ভাষায় খুদে বার্তা ও ভয়েস রেকর্ড করে হুমকি দিয়েছেন। এবিষয়ে তারা আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।