নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ৫০ লাখ ৫৩ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী চট্টগ্রাম বিভাগের।
তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে অবস্থানরত চট্টগ্রাম বিভাগের নাগরিকের সংখ্যা ২০ লাখ ৫১ হাজার ৯৫২ জন।
গত দুই বছরে বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার। জাতীয় পর্যায়ে প্রবাসী আয় গ্রহণকারী খানা বা পরিবারগুলোর ৩৫.২ শতাংশ চট্টগ্রাম বিভাগে বসবাস করে। প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবারগুলো মূলত পল্লি অঞ্চলকেন্দ্রিক। পল্লি অঞ্চলের ১৬.৬ শতাংশ পরিবার রেমিট্যান্স গ্রহণ করেছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় এ হার ৮.৭ শতাংশ এবং পৌরসভা বা অন্যান্য শহরাঞ্চলে তা ১২.৫ শতাংশ।
২০২৩ সালে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২১.৯২ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১.২৯ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২.১০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। বর্তমানে রেমিট্যান্স পাঠানোয় ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা পান প্রবাসীরা। সরকারের দেওয়া ২.৫ শতাংশের সঙ্গে ব্যাংকগুলো নিজেরা আরও ২.৫ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চট্টগ্রামে। এ জেলায় প্রবাসী আয়ে প্রায় ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এসময়ে ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে এসেছে ১৬১ কোটি ডলার। প্রবাসী আয়ের অংশ ক্রমেই বাড়ছে। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে এই জেলার বড় হিস্যার কারণে বিভাগের বিবেচনায়ও এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম বিভাগ। গত অর্থবছরের মোট প্রবাসী আয়ের মধ্যে ৫৯৬ কোটি ডলার বা প্রায় ২৮ শতাংশ এসেছে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায়।
বিদেশ যাত্রায় বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। এ সক্ষমতায় এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম বিভাগের মানুষ। এখানে উচ্চ আয়শ্রেণির মানুষ বেশি, এসব এলাকার সম্পদের দামও বেশি। আছে যোগাযোগ সুবিধাও। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ যত সহজে বিদেশে যেতে টাকা সংগ্রহ করতে পারেন, অন্য জেলার মানুষের পক্ষে তা কষ্টসাধ্য।
সরকারি প্রতিষ্ঠান জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসাবে, বিগত বছরের চট্টগ্রাম জেলা থেকে বিদেশে গেছেন ৬৪ হাজার ২০২ জন।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী সিএনএনবাংলা ২৪কে , চট্টগ্রাম জেলার কর্মীরা যায় প্রধানত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাতের আবুধাবি, আজমান, দুবাই এবং কাতার ও ওমান। সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগও বেশি। এর পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় যাওয়া শুরু হওয়ায় প্রথম স্থানে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম জেলা।