ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল বাড়লেও দূরপাল্লায় যাত্রী সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :

 

বিএনপির ডাকা সারাদেশে চতুর্থ দফার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির শেষ দিন আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল বেড়েছে। কিন্তু যাত্রী সংকটে চলছে না দূরপাল্লার বাস। টানা ৪৮ ঘণ্টার এই অবরোধ গতকাল রোববার ভোরে শুরু হয়েছে, চলবে আগামীকাল মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত।বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, এলডিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো পৃথকভাবে অবরোধের কর্মসূচি পালন করছে। জামায়াতে ইসলামীও পৃথকভাবে রোববার ও সোমবার অবরোধ পালন করছে। এর আগে ৩১ অক্টোবর থেকে সারা দেশে অবরোধের কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। তিন দফায় মোট সাত দিন এই অবরোধ হয়। চতুর্থ দফায় গতকাল ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। মিরপুর, শ্যামলী, আগারগাঁও, তেজগাঁও, ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়। পাশাপাশি রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাও চলতে দেখা যায় সড়কগুলোতে। মূলত এই অবরোধ কর্মসূচি সপ্তাহের শুরুতে হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবীরা। তবে এদিন সকালে রাজধানী থেকে দুরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। এজন্য যাত্রী না থাকাকে দায়ী করেছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

এরআগে রোববার ভোর থেকে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ শুরু হওয়ার পরে বেলা ১১টায় মিরপুরে, সন্ধ্যায় তেজগাঁও, রাতে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি করে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি, জামায়াত ইসলামী, ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল করেছে। ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি-হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং চলমান এক দফা দাবিতে ফের টানা দুইদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এরআগে ২৯ অক্টোবর হরতাল, ৩১ অক্টোবর, ১, ২ ও ৫, ৬ এবং ৮ , ৯ নভেম্বর তিন দফা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ডাকা পূর্বের হরতাল ও অবরোধে রাজধানী ঢাকায় কম পিকেটিং মিছিল হলেও রাস্তায় গণপরিবহন চলেছে একবারে সীমিত আকারে। রাজধানীবাসী ব্যক্তিগত কাজে রিকশা, সিএনজি ও প্রাইভেট কার নিয়ে চলছে। এটি স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। তবে ঢাকার বাহিরে ব্যাপকভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। দেশব্যাপী হরতাল ও অবরোধে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ভাংচুর ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে বিএনপি জামায়াতসহ বিরোধী দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

 

 

এদিকে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সংঘাতে পণ্ড হওয়ার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলের উল্লেখযোগ্য নেতাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ২৮ অক্টোবর রাত ১০টার পর থেকে এখন ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ, সেদিনের সংঘাতের পর থেকে কোনো নেতাকর্মী বা অফিস সহকারীকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া অবস্থান। কাঁটাতারে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ।