ই-পেপার | শনিবার , ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংলাপ নিয়ে দলে আলোচনা নেই, আমুর বক্তব্য ব্যক্তিগত: তথ্যমন্ত্রী

সিএনএন বাংলা২৪,ঢাকা:

বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে সরকার, আওয়ামী লীগ এমনকি ১৪ দলের মধ্যেও কোনো আলোচনা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

ক্ষমতাসীন দলের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের ভাষ্য, আমুর ওই বক্তব্য তাদের দলের অবস্থান নয়।

বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময় মন্ত্রী বলেন, “আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্ত্যবটি দিয়েছেন সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য।”

 

ওই বক্তব্যের পর আমুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে জানিয়ে হাছান বলেন, “কাগজে বা গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তিনি (আমু) ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক, এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত। এটি দল, সরকার এমনকি ১৪ দল কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।”

বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় কী লাভ হবে, সেই প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিএনপির সঙ্গে অতীতে আলোচনার অভিজ্ঞতায় বলা যায়, এই সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চায়, যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, তাদের সাথে আলোচনা করে কী হবে, সেটি হচ্ছে বড় প্রশ্ন।”

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলেন, সেটিও মনে করিয়ে দেন হাছান।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাড়ির দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরেও দরজা খোলেনি। সেই দলের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসেছেন এবং আলোচনায় বসার ইচ্ছা ব্যক্তও করেছিলেন। কিন্তু কী লাভ হয়েছিল?”

কী বলেছিলেন আমু

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের সমাবেশে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

তিনি বলেন, “আসুন, গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমরা আপনাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দ্বার খোলা। তিনি বলেছেন, যে কোনোভাবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে তিনি প্রস্তুত।

আরোওখবর…<পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল বাঙালিদের দ্বারা : প্রধানমন্ত্রী

“আমরা বলতে চাই, বিগত সময়ে জাতিসংঘ যেভাবে তারানকো সাহেবকে পাঠিয়েছিলেন। আামাদের দুই দলকে নিয়ে এক সঙ্গে বসে মিটিং করেছিলেন। আজকেও প্রয়োজনে এই ধরনের দলাদলি না করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক।”

আওয়ামী লীগের এই বর্ষিয়ান নেতা বলেন, “আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই। কোথায় ফারাক? সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে বাধা কোথায়? কীভাবে সেটা নিরসন করা যায়। এটা আলোচনার মধ্য দিয়েই সুরাহা হতে পারে। অন্য কোনো পথে নয়।”

নাকচ করেছেন কাদের

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা নাকচ করেছেন। আর আমু এই বক্তব্য রাখার পরদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আলোচনার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের নিজেদের সমস্যা আমরা আলোচনা করব, প্রয়োজন হলে নিজেরাই সমাধান করব।”

জাতিসংঘের মধ্যস্থতার কথাও উড়িয়ে দেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, “এখন বাইরের বিষয়টা কেন বার বার আসে? জাতিসংঘ কেন মধ্যস্থতা করবে? জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করবে এমন কোনো রাজনৈতিক সংকট এই স্বাধীন বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত হয়নি।”

‘আলোচনা হলে হবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে’

বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কি আর কোনো সুযোগ নেই? এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপির যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রসঙ্গ থাকে সেটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। নির্বাচন আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের ডাকে আমরা নির্বাচন কমিশনে যাব।”

আগামী নির্বাচনে আসতে বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত দিলে সরকারের অবস্থান কী হবে, এ প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়াকে চাইলেই সরকার মুক্তি দিতে পারবে না, উনি আদালত কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত, দণ্ডপ্রাপ্ত। এটি তো আদালতের এখতিয়ার।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই নির্বাচনে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক এবং সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি চমৎকার নির্বাচন হোক। বিশ্বের কাছে উদাহরণ স্বরূপ একটি নির্বাচন হোক সেটি আমরা চাই।”

বিএনপি নির্বাচনকে ‘ভয় পায়’ মন্তব্য করে হাছান বলেন, “তারা ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছ। … তারা আসলে নির্বাচন প্রতিহত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেই কথাটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবার বলেছেন। কিন্তু এবার আর তাদের পক্ষে নির্বাচন প্রতিহত করা কিংবা বর্জন করা সম্ভব হবে না। দেশে অবশ্যই একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।”

তার ভাষ্য, “বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল, কানাডার আদালত কর্তৃক রায়প্রাপ্ত সন্ত্রাসী, অর্থাৎ সিলমারা সন্ত্রাসী। আদালতের রায়ে একেবারে সিলমরা সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল।”

বিএনপির সঙ্গে আলোচনার দ্বার খোলা: আমু
বিএনপির সঙ্গে কথা বলার কিছু নেই: শেখ হাসিনা
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সিদ্ধান্ত হয়নি: কাদের
গণতন্ত্র চাইলে আলোচনার কোনো বিকল্প নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: