মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ :
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঁঞা বলেছেন, নির্বাচনের আগে সাধারণ কোনো মামলা নেওয়া হবে না। রোববার (৩ ডিসেম্বর ২০২৩) তারিখে দুপুর আড়াইটার দিকে কার্যালয়ে গিয়ে ভালুকা থানায় একটি মামলা রুজুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
অভিযোগ সূত্র জানায়, জেলার গৌরীপুর উপজেলার বারুয়ামারী এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় বসবাস করে ব্যবসা করেন। ব্যবসা করার সুবাদে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সোহাগ নিজেও ভালুকায় ভাড়ায় বসবাস করে সুতলি ফ্যাক্টরির ব্যবসা করতেন। মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগ ভালুকায় সুতলির কারখানায় ব্যবসা করে লোকসানে পড়েন। ব্যবসায় লোকসানে পড়ে মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগ ঋণ পরিশোধ করতে এক মাসের সময় বেঁধে দিয়ে আবু বকর সিদ্দিকের কাছ থেকে প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি দলিলে চুক্তি করে শর্তসাপেক্ষে ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ধার নেন। এক মাস মেয়াদে টাকা ধার নিয়ে জাহিদুল ইসলাম সোহাগ ভালুকা ছেড়ে নিজ বাড়ি শেরপুরের নকলায় চলে যান।
এমতাবস্থায় প্রায় ১০ মাস চলে গেলেও টাকা না দিয়ে জাহিদুল ইসলাম সোহাগ বিভিন্ন ছলচাতুরি করছিলেন। গত ১৮ নভেম্বর আবারও আবু বকর সিদ্দিক টাকা চেয়ে মো. জাহিদুল ইসলামের নম্বরে কল দেন। এ সময় জাহিদুল ইসলাম সোহাগ টাকা দেবেন না বলে জানান। এই ঘটনার পরদিন আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগকে অভিযুক্ত করে গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ইং তারিখে ভালুকা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের পর ১৩ দিন পার হলেও অভিযোগের কোনো অগ্রগতি না দেখে ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেনের কাছে যান আবু বকর সিদ্দিক ও তার আত্মীয়। এ সময় ওসি কামাল জানান, নির্বাচনে অনেক কাজের চাপ। তাই নির্বাচনের আগে সাধারণ কোনো মামলা নেওয়া হবে না। নির্বাচনের পরে যাওয়ার কথা বলেন ওসি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, জাহিদুল ইসলাম সোহাগ ভালুকায় সুতলির কারখানা চালাতেন। কারখানায় লোকসান করে আমার কাছ থেকে ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ধার নেন। এরপর আরও একজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে পালিয়ে তার নিজের গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এরপর থেকে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। টাকা চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা করে এবং টাকা দেবেন না বলে জানান। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, বিবাদী জাহিদুলের নম্বরে কল দিয়েছি। তিনি থানায় আসবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন টালবাহানা করেন। এ বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঁঞার সঙ্গে তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করলে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে কোনো সাধারণ মামলা নেওয়া হবে না।