ইয়াছমিন মুন্নী, কক্সবাজার :
কক্সবাজার শহরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বৃষ্টি দাশ নামের এক কলেজছাত্রী। বুধবার (২৯ নভেম্বর) কক্সবাজার পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের হরিজনপাড়ায় নিজেদের বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বৃষ্টি দাশ কক্সবাজার কমার্স কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে হরিজনপাড়ার বাসিন্দা বাবু দাশের মেয়ে। আত্মহত্যার পূর্বে বৃষ্টি দাশ প্রেমে প্রতারিত হওয়ার বর্ণনা দিয়ে একটি চিরকুট লিখে যায়। এতে তার কথিত প্রেমিক বাবু দাশ কর্তৃক প্রতারিত হওয়ার কথা তুলে ধরে।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, ‘ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। চিরকুট দেখে ধারণা করা হচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘
এলাকাবাসী জানিয়েছে, বৃষ্টি দাশের সাথে বাবু দাশ নামের এক তরুণের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। প্রেমিক বাবু বিয়ের আশ্বাস দিয়েও বৃষ্টির সাথে প্রতারণা করে। একপর্যায়ে বৃষ্টিকে মেসেঞ্জার ও ফেসবুকে ব্লক করে দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বাবু। ফলে প্রেমে প্রতারিত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বৃষ্টি। আত্মহত্যার পূর্বে বৃষ্টি একটি চিরকুট লিখে যায়।
ওই চিরকুটে বৃষ্টি যা লিখে:
“বাবু তুমি আমার সাথে যা করলে, ভালো করলে না। তুমি আমার সাথে এমন করবে কোনদিন ভাবিনি। যাক বাবু! তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে বাজি ধরেছো যে তুমি আমাকে নষ্ট করে দেখাবে। আমার মান সম্মান নিয়ে খেলবে! ঠিকই খেলেছ! আমার জীবন নিয়ে খেলে কী পেয়েছো বলো? আমি তোমার জন্য কি না করিনি? দিনশেষে তুমি আমাকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিলে। আমাকে একবার বলতে পারতে। আর তুমি আমাকে বিয়ে করার আশা দিয়ে কত কিছুই না করলে, বলো বাবু? আমার সাথে ভালো করো নাই। যদি আমার মা বাবা বিচার না করে, আমার ভগবান বিচার করবে। আর আমার অভিশাপ তোমার গায়ে পড়বে। ভালো থেকো আমার বাবু! বাবু আমার সাথে যা করেছে তা তার বন্ধুরা জানে। প্রথমে রনি! রনিকে ধরলে সব জানতে পারবেন, বাবু আমার সাথে কী করেছে।
আর মা-বাবা আপনারা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। আমিও ভালোবাসি আপনাদের সবাইকে। সব মা-বাবা তো চাই যে তার মেয়েকে ভালো ছেলের সাথে বিয়ে দিতে। কিন্তু আমার শরীরের ভিতরে বাইরে কি হচ্ছে তা আমি জানি। আমাকে বিয়ে দিয়ে কোনদিন সুখ পেতে না। কারণ আমি জানি আমার শরীরে কী আছে কী নাই। যাক, ভালো থাকবেন, কেমন?”
