ইয়াছমিন মুন্নী, কক্সবাজার :
কক্সবাজারের রামু থানাধীন চা-বাগান থেকে ব্যাটারিচালিত গাড়ি ডাকাতিচক্রের মূলহোতা সেলিম ও সালামতসহ চক্রের ৬ সদস্যকে রামু ও উখিয়া থেকে র্যাব-১৫ গ্রেফতার করেছে। তাদের নিকট থেকে ৫টি থ্রি-হুইলার উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল জানতে পারে, গত ১৬ নভেম্বর কক্সবাজারের রামু বাইপাস এলাকায় কিছু ডাকাত অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক একটি অটোরিকশা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রেক্ষিতে ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় র্যাব-১৫, ব্যাটালিয়ন সদরের একটি চৌকস আভিযানিক দল রামু এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে শনাক্তকৃত একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উখিয়া ও কুতুপালং এলাকা থেকে চক্রটির মূলহোতা সেলিম ও সালামতসহ চক্রের চার সদস্য এবং যে গ্যারেজে ডাকাতিকৃত অটোগুলো বিক্রি করা হয় তার মালিক শফিককে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ৫টি থ্রি-হুইলার।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতচক্রের মধ্যে ছিলো, রামু থানার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মোঃ নুরুল আমীনের পুত্র মোঃ সেলিম (২৫), রামু থানার জোয়ারিয়ানালার উত্তর মিঠাছড়ির পাহাড়িয়াপাড়ার মাকসুদ মিয়া মিস্ত্রির পুত্র ছালামত উল্লাহ (৪০), ২ নং ওয়ার্ডের চা বাগানের পাহাড়িয়াপাড়ার নূর মোহাম্মদের পুত্র কলিমউল্লাহ (২৫),
রামু হাসপাতাল গেইট এলাকার মনির আহম্মদের পুত্র জাহিদুল ইসলাম (২৫),
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা বাগানের পাহাড়িয়াপাড়ার ২ নং ওয়ার্ডের নুর মোহাম্মদের পুত্র রফিক উল্লাহ (২০) ও উখিয়া থানার কুতুপালংয়ের পশ্চিমপাড়ার ৯ নং ওয়ার্ডের জাকির হোসেনের পুত্র শফিকুর রহমান (২৪)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ব্যাটারিচালিত গাড়ি ডাকাতির সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের সাথে জড়িত। আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত চক্রটি প্রথমে একটি সিএনজি অটো/ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার টার্গেট করে ২/৩ জন সদস্য যাত্রী সেজে রিজার্ভ ভাড়া করে নেয়। চক্রের বাকি ৪/৫ সদস্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানের আশেপাশে অবস্থান করে। যাত্রীবেশে ডাকাত সদস্যরা নিয়মিত বাকি সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। যখনই তাদের নির্ধারিত স্থানে গাড়িটি আসে তখন যাত্রী বেশে থাকা একজন সদস্য প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে গাড়িটি থামায়। এ সুযোগে অন্য সদস্যরাও এগিয়ে আসে এবং সবাই মিলে গাড়ির ড্রাইভারকে অস্ত্রের মুখে মারধর, ছুরিকাঘাত করে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ড্রাইভাররা মারাত্মকভাবে আহত হয়, এমন কি নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেক ক্ষেত্রে। গ্রেফতারকৃত অপরাধী চক্র ছিনতাইকৃত গাড়িগুলো কুতুপালং এ অবস্থিত শফিকের গ্যারেজে বিক্রি করে। গ্রেফতারকৃত শফিক সম্পর্কে মূলহোতা সালামতের শ্যালক। শফিক গাড়িগুলোর কাঠামো, রং এবং কাপড় পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেয় বলে স্বীকার করেছে।
উদ্ধারকৃত ৫টি থ্রি-হুইলারসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে রামু থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।