নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রবাসে উচ্চ শিক্ষার জন্য যাওয়া ছেলের দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও সুখরঞ্জন বালিকে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার সূত্র ধরে মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে- এমন দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা হচ্ছে। এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন দাবি করেছেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, জামায়াতের নাশকতার বৈঠকে অংশ নেওয়ায় সেই নারী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হবিগঞ্জে পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব শেরেবাংলা নগর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
তার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বেলা পৌনে ১২টায় হাসপাতালে আসেন আইজিপি। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন পুলিশ প্রধান।
প্রবাসে থাকা ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে ঘিরে তার মাকে গ্রেপ্তার মানবাধিকারের লঙ্ঘন কী না, জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, বিষয়টি আমি পরিষ্কার করতে চাই। খুলনার একজন জামায়াতের নায়েবে আমিরের বাসায় নাশকতা এবং আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর একটি ষড়যন্ত্র চলছিল। সেখানে অনেকে জড়ো হয়েছিল। সে তথ্য পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং অভিযান পরিচালনা করি।
তিনি বলেন, আমাদের (পুলিশের) উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে পালিয়ে যায়, আমরা সেখান থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আমাদের জানা ছিল না, এ তিনজন কে বা কারা। আমরা যাদের গ্রেপ্তার করেছি এদের মধ্যে একজন মহিলা ও দুজন পুরুষ।
গ্রেপ্তারের পর আমরা জানতে পেরেছি ওই নারীর প্রবাসে থাকা ছেলে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। ওই নারীকে গ্রেপ্তারের সময় সেখান থেকে আমরা কিছু ডিজিটাল ডিভাইস পেয়েছি, ল্যাপটপ পেয়েছি, নাশকতার আলামত পেয়েছি। দায়ের করা মামলায় এ সংক্রান্ত তথ্য উঠে এসেছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল, অভিযানের ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল না।
সম্প্রতি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ছাত্রদলের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, পুলিশ পুরাতন অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে নেতাকর্মীদের ফাঁসিয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, এমন দাবি সঠিক নয়। আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি, তাদের হেফাজত থেকে যেসব অস্ত্র পাওয়া গেছে সেগুলো উদ্ধার দেখিয়েই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিএনপি নেতাদের এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।
সম্প্রতি পুলিশ সদস্যদের অনেকে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। সেটি তুলে ধরে বিএনপি নেতারা সমালোচনা করছেন, বলছেন, সরকারি দায়িত্বে থেকে এমন বক্তব্য অপেশাদার।
এ প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, আমার দৃষ্টিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনোব সদস্যের রাজনৈতিক বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়নি। আমি আইন ও বিধির আলোকে দায়িত্ব পালন করে থাকি। আইন ও বিধির আলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য যে দায়িত্ব পালন করা দরকার, যে চ্যালেঞ্জ আমার সামনে আসবে সেটি মোকাবিলা করতে হবে। এটা আমার আইনি দায়িত্ব। পেশাদারিত্বের সঙ্গে সে আইন প্রয়োগ করার দায়িত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে। এ আইনানুগ দায়িত্ব পালনে পুলিশ সদস্যরা কুণ্ঠিত নয়। আমি আমার দায়িত্ব পালনে বাধ্য। আমার প্রশিক্ষণ রয়েছে, প্রশিক্ষণে আইন সম্পর্কে পড়ানো হয়েছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার, যে যে দায়িত্ব পালন দরকার আইনানুগভাবে পেশাদারিত্বের সঙ্গে আমরা পালন করে আসছি।