মুহাম্মদ অমির হোছাইন , কক্সবাজার :
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মাঝেই প্রস্তুতি চলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অনেকটা নিরুত্তাপ ভোটের মাঠ। রবিবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া ও পেকুয়া) : সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি
২০১৮ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে ৪৫ বছর পর জাফর আলম নৌকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত পাঁচ বছরে তার বিরুদ্ধে এলাকায় জমি দখল, দলীয় নেতাদের নির্যাতন, চিংড়ি ঘের দখলসহ নানা অভিযোগ উঠে। দলের একটি বড় অংশ তাকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য তৎপর রয়েছে। এ আসনে এবার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি নৌকার টিকেট পেলেন ।
এ ছাড়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, জেলা আ্ওয়ামী লীগ নেতা এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, রাশেদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম সজীব দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফরম জমা দিয়েছিলেন।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী ও কুতুবদিয়া) : আশেক উল্লাহ রফিক
বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) আশেক উল্লাহ রফিক আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন বলেই আগেই ধরে নিয়েছিল নেতাকর্মীরা। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি জেলা সফরে গিয়ে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাইলেও কোনো এমপি বা প্রার্থীকে মঞ্চে ডেকে জনতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেননি আওয়ামী লীগ সভাপতি।
কক্সবাজারে এসে মাতারবাড়ীর জনসভায় শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়ার সময় এমপি আশেককে মঞ্চে নিজের কাছে ডেকে নেন এবং সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আশেককে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম।’ এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি মনোনয়নের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ আগেই ছিল বিশ্বাস এমপি আশেক ও তার অনুসারীদের। এবার দলীয় সভাপতির ‘গ্রিন সিগন্যাল’ সত্যি হয়েছে, আগামী নির্বাচনের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক ।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) : সাইমুম সরওয়ার কমল
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে টানা দুই বার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাইমুম সরওয়ার কমল। এবারও নৌকায় মাঝি তিনি । তবে এ আসনে তার ছোট বোন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরীও অন্যদিকে বর্তমান এমপির বড় ভাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজলও মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপে ছিল।
এছাড়াও নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে মাঠে তৎপর ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফোরকান আহমদ, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজার জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক এমপি মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী।
কক্সবাজার-৪ ( উখিয়া- টেকনাফ ): শাহীন আক্তার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন টিকে গেলেন বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার । তিনি সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির স্ত্রী । এ আসনে দলীয় মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন আরও আট নেতা।
গত নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুর রহমান বদি। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদির পরিবর্তে তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তারকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনিও নির্বাচিত হন।
এবারও বদি-শাহীন দম্পতি ছাড়াও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি শাহ আলম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সমাজকর্মী মনোয়ারা বেগম মুন্নী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী।