আন্তর্জাতিক ডেস্ক,সিএনএন বাংলা২৪:
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯০০ জন। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ সচিব প্রদীপ জেনার বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এএনআইসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ৩টি ইউনিট, ওড়িশা রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর ওড়িশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ৪টি ইউনিট, রাজ্যের ফায়ার সার্ভিস বিভাগের ১৫টি উদ্ধারকারী দল, ২০০ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা, ৩০ জন ডাক্তার এবং ৬০টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত আছে বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্য সচিব।
ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফায়ারসার্ভিস ও অন্যান্য বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে— কারণ দুর্ঘটনার শিকার করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটির কয়েকটি কামরায় এখনও আটকা পড়ে আছেন যাত্রীরা। তাদের বের করে আনতে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
শুক্রবার (২ জুন) স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ের উদ্দেশে কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ১২৮৪১ আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
তারপর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পার হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেনটি পৌঁছায় বালেশ্বরে। তার আরও এক ঘণ্টা ২০ মিনিট পর বাহাঙ্গা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি।
ওড়িষার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক শনিবার ব্যাপক প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনার জেরে রাজ্যে একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, শনিবার রাজ্যে কোনো ধরনের উদযাপন-অনুষ্ঠান হবে না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, একটি মালগাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। এর ফলে ট্রেনের প্রথম তিনটি কামরা বাদে সবকটি কামরাই লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপর উঠে গেছে।
যে রেললাইনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তার কাছেই অশোকের দোকান। দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার কথা ভাবছিলেন তিনি। হঠাৎ শুনলেন রেললাইনে কানফাটা এক শব্দ।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি ও আরও বেশ কয়েকজন রেল লাইনের দিকে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, রেল লাইন থেকে ছুটে মাটিতে পড়ে আছে ট্রেনের বগি।
ঠিক ওই সময়ের দৃশ্যের বর্ণনা করে অশোক বলেন, সবাই চিৎকার করছিল আর রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারিদিক। উল্টে যাওয়া বগিগুলোতে আটকে পড়া বেশ কয়েকজন সাহায্য চাইছিল। আমি উল্টে যাওয়া বগির নিচে বেশ কিছু মৃতদেহ আটকে থাকতেও দেখেছি।
দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনে থাকা শ্রমিক গোবিন্দ মন্ডল ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়েছেন। তিনি বলেন, আচমকা দুর্ঘটনায় আমাদের কামরাটা খুব দ্রুত গতিতে লাইনচ্যুত হয়েছিল। বেশ কিছু দূর গিয়ে সেটা থেমেছিল। হট্টগোলের মধ্যে হঠাৎ দেখেছিলাম, আমার আসনের পাশের জানালাটা লোহার গ্রিলসহ ভেঙে গেছে। উদ্ধারকারীদের একজন সেটা ধাক্কা মেরে খুলে ফেলেছিল। তাতেই আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছিলাম।
এইচ এমকাদের,সিএনএন বাংলা২৪: