আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বোমা হামলার হুমকি দিয়ে ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজার আল-কুদস হাসপাতাল ফের খালি করতে বলেছে দখলদার ইসরায়েল। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রকাশ, রোববার (২৯ অক্টোবর) দিনভর আল-কুদস হাসপাতালের আশপাশের এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এবার আল-কুদস হাসপাতাল ও এর প্রাঙ্গণে হামলা চালানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সবার্তায় এ দাবি করেছে গাজার রেড ক্রিসেন্ট। মানবিক সংস্থাটি বলেছে, আমরা গাজা উপত্যকার আল-কুদস হাসপাতালকে অবিলম্বে খালি করার জন্য দখলদার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে হুমকি পেয়েছি। কারণ এখানে বোমাবর্ষণ হতে চলেছে। আজ সকালেই হাসপাতাল থেকে ৫০ মিটার দূরে অভিযান চালানো হয়েছে।
তবে ইসরায়েলের এই হুমকি ও সতর্কবার্তা প্রত্যাখ্যান করেছে রেড ক্রিসেন্ট। তারা জানিয়েছে, হাসপাতালটির আইসিইউতে অনেক রোগী আছেন। অনেক শিশুকে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। এ মুহূর্তে এসব রোগীকে অন্য কোথাও বা অন্য হাসপাতালেও সরানো অসম্ভব। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা -ডব্লিউএইচও। কারণ, হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ মুহূর্তে ১৪ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। উল্লেখ্য, এরআগেও আল-কুদস হাসপাতাল খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী, অন্যথায় ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হুঁশিয়ারি দেয় তারা।
গত ২০ অক্টোবর ফোনে ওই হাসপাতাল পরিচালককে এক ইসরায়েলি সেনা হুঁশিয়ারি দেন, ‘যদি হাসপাতাল খালি না করো, তাহলে (করুণ) পরিণতি ভোগ করতে হবে’। এদিকে, গাজায় আল-শিফা হাসপাতালে হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি। গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র এটি। ইসরায়েলের দাবি, চিকিৎসা কেন্দ্রটি প্রধান সদর দফতর হিসেবে ব্যবহার করে হামাস। প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। গাজার উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত ইরেজ ক্রসিংয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ২২০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় হামাসযোদ্ধারা।
পাল্টা জবাবে হামাস শাসিত গাজায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। যা এখনও চলছে। গাজা অবরোধ করে স্থল অভিযানও চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজার ২.৩ মিলিয়ন বাসিন্দাও খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের সংকটে ভুগছে। বাসি-পচা খাবার খাচ্ছে গাজাবাসী। গত সপ্তাহান্তে রাফাহ ক্রসিং পয়েন্ট খোলার পর থেকে মাত্র কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। গত ২৩ দিনের এই যুদ্ধে গাজায় ৭ হাজার ৭০৩ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।