ই-পেপার | মঙ্গলবার , ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে খুন: ঘাতক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় ঘাতক জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৮ অক্টোবর) জহিরুলকে নরসিংদীর মাধবদী থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানায় ,খুন হওয়া জেকি আক্তারের বাবা আবুল হোসেন।

 

এর আগে, খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে আবুল হোসেন বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী দক্ষিণপাড়া গ্রামের সৌদিপ্রবাসী শাহ আলমের বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতর থেকে তার স্ত্রী জেকি আক্তার (৪০) ও দুই সন্তান মাহিন ইসলাম (১৬) ও মহিন ইসলামের (৬) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তার সাত মাস বয়সী মেয়ে শিশু ওজিহাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। শাহ আলমের শ্বশুর আবুল হোসেন বলেন, এ ঘটনা আমার নাত-জামাই ঘটিয়েছে। তাকে নরসিংদীর মাধবদী থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে বাঞ্ছারামপুর থানায় পুলিশ হেফাজতে আছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমার বড় মেয়ে শিল্পী আক্তারের মেয়ের নাম আনিকা আক্তার। নরসিংদীর সদরের নূরালাপুর ইউনিয়নের আলগী চর গ্রামের জহিরুল ইসলামের সঙ্গে দেড় বছর আগে আনিকার বিয়ে হয়। কিন্তু শাশুড়ির সঙ্গে তার মনোমালিন্য চলছিল। তার শাশুড়ি রাগী ছিল, এজন্য স্বামীর বাড়ি যেত না। মেয়ে-জামাই আজিজুর রহমান ও মেয়ে শিল্পীও তাকে শ্বশুরবাড়িতে যেতে দিচ্ছিল না। সোমবার সকালে জহিরুল খালা-শাশুড়ি জেকি আক্তারের বাসায় এসেছিল। স্ত্রী আনিকাকে বুঝানোর জন্য জেকিকে অনুরোধ করে। জেকি বিষয়টি নিয়ে তার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে বলেন। পরে জহিরুল চলে যান। সোমবার রাতে আবার আমার মেয়ে জেকির বাসায় যায় জহিরুল। তার শ্বশুর-শাশুড়িকে বিষয়টি না বলার জন্য জেকিকে অনুরোধ করে। কিন্তু তখন জেকি বিষয়টি মুঠোফোনে আমার বড় মেয়ে শিল্পীকে অবগত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মেয়ে জেকিকে প্রথমে বটি দিয়ে কুপিয়ে, পরে বড় নাতিকে মেঝেতে শুইয়ে কুপিয়ে এবং শেষে ছোট নাতিকে বাথরুমে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তাদের বাটাল দিয়েও আঘাত করে।

 

‘এরপর জহিরুল বাইরে থেকে ফটকে তালা দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। বাড়ির চারপাশে থাই গ্লাস থাকায় তাদের চিৎকার বাইরে থেকে কেউ শুনতে পায়নি।’ নিহতের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, আমার মেয়ে অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিল। সব জা, শ্বশুর-শাশুড়িসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। কারও সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল না। শ্বশুর-শাশুড়ির সেবাযত্ন করত। কেন এমন হয়েছে, জানি না। এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।

 

বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, নরসিংদীর মাধবদী থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা ঘটনার খুব কাছাকাছি আছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।তিনি আরও বলেন, জেকি আক্তারের মাথার পেছনে ও কোমরে, মাহিনের মাথার পেছনে ও মহিনের হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বটি দা ও ধারালো বাটাল উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবি পুলিশের একটি দল এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দলসহ পুলিশের একাধিক ইউনিট ঘটনা তদন্তে কাজ করছে।

 

 

আমির ,সিএনএন বাংলা২৪