শহিদুল ইসলাম:সিএনএন বাংলা২৪
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার লক্ষে সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় দাওয়াত না পাওয়ায় ভাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বুধবার রাতে ওসির বিরুদ্ধে সমালোচনা করে সোস্যাল মিডিয়ায় একটি পোষ্ট করেন উপজেলা আ’লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা মিয়া। এর আগের দিন বুধবার সকালে ভাঙ্গা থানা প্রাঙ্গনে পুলিশের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিষয়টি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে।তবে, পুলিশের ভাষ্য, ওই মতবিনিময় সভায় সুধীসমাজ ও রাজনৈতিক পর্যায়ের সকলকেই তারা দাওয়াত দিয়েছিলেন। ‘ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট আমাদের জিজ্ঞাসা’ শিরোনামে রাজা মিয়া নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার প্রয়াসে সুধি সমাবেস ও মতবিনিময় সভা। আয়োজনে, ভাঙ্গা থানা, ফরিদপুর।
লেখা ব্যানার সম্বলিত একটি সমাবেশের ছবি দেখতে পেলাম। সেই সমাবেশে প্রধান ও বিশেষ অতিথিদ্বয়ের ভাষ্যমতে সমাজের সকল স্তরের সুধীজন বা তাদের প্রতিনিধি সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। শুধু অনুপস্থিত বা দাওয়াত দেওয়া হয়নি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যে দলের নির্বাচিত সভাপতি, সেই স্বাশীনতার নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে। সংগত কারনেই আমরা মনে করি স্বাধীনতার প্রতীক নৌকার সৈনিক বিধায় আমাদেরকে এই রকম একটা সমাবেশে ভাঙ্গা থানা কর্তৃপক্ষ আওয়ামী লীগকে বাইপাশ করে আওয়ামী বিরোধী শিবিরকে প্রতিষ্ঠা করার এজেন্ডা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে, যা থানা প্রশাসনের নিকট মোটেও কাম্য নয়।
পরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানার ছবি সংযুক্ত করে তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে, জাতীয় স্লোগান দিয়ে রাজা মিয়ার লেখা পোষ্টটি শেষ করা হয়। উপজেলা আ’লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা মিয়া বলেন, এই ওসি থানায় যোগদানের পর কোন কার্যক্রমেই আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয় না। আমরা নৌকার দল করি বলেই কি আমাদের অপরাধ। তার অভিযোগ, যারা স্বাধীনতা বিপক্ষের শক্তি, তাদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব নিয়ে কেউ এই থানায় আসলো কি না ? এ ঘটনায় তিনি দলের উপর মহলসহ ফরিদপুরের পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাজার বনিক সমিতির সভাপতি শহিদুল হক মিরু মুন্সি জনান, অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন বনিক সমিতির সভাপতি হিসেবে, দলীয় নেতা হিসেবে নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন রুবেল জানান, অনুষ্ঠানটির আয়োজক থানা পুলিশ। তিনি সেখানে অতিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও পদাধিকার বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিঃসন্দেহে দাওয়াত পাওয়ার দাবিদার। কিন্তু কেন দাওয়াত পায়নি, সেটা থানা পুলিশ ভালো বলতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় থানার ওসি জিয়ারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আইন শৃঙ্খলার সমুন্নত রাখার প্রয়াসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেই জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সভার আগেই সবাইকেই দাওয়াত দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দাওয়ার না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, সে প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান (পিপিএম) এ প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।