মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের কারণে ও অতিরিক্ত রোগীর চাপে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। ফলে হিমসিম খেতে হচ্ছে কর্মরত চিকিৎসকদের।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৯১৮৪-৮৫ সালে স্থাপিত এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও বর্তমানে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বেডেরও জনবল নেই।
নিয়মানুসারে এলাকার জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে জুনিয়র কনসালটেন্ট ১০ জন থাকার কথা থাকলেও সেখানে কোনো কনসালটেন্ট নেই। এমএলএসএস ৫ জনের বিপরীতে ১ জন, ওয়ার্ড বয় ৫ জনের বিপরীতে ২ জন, আয়া ৪ জনের বিপরীতে রয়েছে ১ জন। এছাড়া সিকিউরিটি গার্ড নেই। পরিষ্কার পরিছন্নতাকর্মী ৫ জনের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ১ জন। মালির পদটিও শূন্য।
একদিকে যেমন জনবল সংকট অন্যদিকে অপারেশন থিয়েটার ও আধুনিক যন্ত্রপাতিগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হতে চলেছে। অযত্ন-অবহেলায় ফেলে রাখার কারণে ধুলোবালি পড়ে সরকারের দেয়া এসব যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জানা যায়, অপারেশন থিয়েটার ও আধুনিক যন্ত্রপাতির মধ্যে যেটা দিয়ে আসল কাজ করতে হয় সেটি নেই, এজন্য সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হতে চলেছে।
এ ছাড়াও হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবস্থা থাকলেও আল্ট্রাসনোর জন্য অভিজ্ঞ কোন লোক না থাকায় এখানে কোন আল্ট্রাসনোগ্রাফি হয় না। অপরদিক নেই ডিজিটাল এক্সরে মেশিন। এনালগ এক্সরে মেশিনের এখন আর কোনো কাজ চলছে না। যিনি এক্সরে করাতেন তিনি অবসরে যাওয়ায় সেই পদটিও শূন্য । স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, এখানে চিকিৎসাসেবার মান নিম্নমানের। সময়মতো কোনো কিছুই পাওয়া যায় না। এদিকে বহিঃবিভাগে রোগীরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে সেবা না পেয়ে ফিরে যান এমনও অভিযোগ অনেকের।
মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ ও ওয়ার্ডে নেই কোনো বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে নাই আর নাই।
এছাড়াও আবার অল্পতেই রোগীদের রেফার্ড করা হয় কক্সবাজার সদরসহ আশপাশের হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষের মতে, জনবল না থাকায় এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের বিষয়ে ইতোমধ্যে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। অপারেশন থিয়েটার ও আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই, তাই কোনো অপারেশন কিংবা আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয় না। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এজেডএম সেলিম জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।