নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁদপুর: যমজ দুই ভাই বয়স মাত্র ১৫ দিন। তাদের বয়স যখন ১২ দিন তখন তাদের বাবা ইমন হোসেন (২৭) হত্যার শিকার হন।
দুই বছর বয়সী বড় ভাইসহ মাকে নিয়ে ফুফুদের কোলে চড়ে মানববন্ধনে আসে তারা। দাবি একটাই বাবা হত্যার বিচার। এ সময় কান্না করতে করতে স্বামী হত্যার বিচার চাইলেন তিন শিশুর মা ইমনের স্ত্রী রহিমা বেগম।
গত শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তিন গ্রামের লোকদের সংঘবদ্ধ হামলায় হত্যার শিকার হন চাঁদপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের লোধপাড়া গ্রামের মো. হারুনুর রশিদের ছেলে ইমন হোসেন।
হত্যার বিচার দাবিতে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওই ইউনিয়নের জনতা বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইমনের স্বজনরা। মানববন্ধনটি একপর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিলে রূপ নেয়।
মানববন্ধনটি স্থানীয় জনতা বাজার থেকে শুরু হয়ে টেকের বাজার ও ইছাপুরা গ্রাম প্রদক্ষিণ শেষে জনতা বাজারে এসে শেষ হয়। এতে প্রায় সহস্রাধিক বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ অংশ নেয়। মিছিল শেষে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কালা মানিকসহ বেশ কয়েকজন বক্তব্য দেন।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজারগাঁও ব্যাপারী বাড়িতে একটি ওয়াজ মাহফিলে দুই যুবকের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। সেই ঘটনার বিরোধ মিটাতে এগিয়ে যান ইমন হোসেন নামে (২৭) এক যুবক। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জিলানী নামে একজন। ইমনকে শায়েস্তা করতে ১৫ থেকে ২০ জনের স্থানীয় একটি দল ভাড়া করে জিলানী। জিলানীর কথায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই দলটি চারটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা করে ইমনের এলাকায় আসে। এসেই দলটি ইমনকে বাজারে পেয়ে যায়। সেসময় মাগরিবের নামাজ চলছিল। ইমন ওই দলটির লোকজনকে দেখে নিজেকে বাঁচাতে বাজারের পাশের একটি বাড়ির দিকে দৌড়ে যান।
কিন্তু ১৫ থেকে ২০ জনের ওই সংঘবদ্ধ দলটি তাড়া করে ইমনকে ওই বাড়ির বাগানে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে ফেলে রেখে চলে যায়। এর পরেই স্থানীয়রা ইমনকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ঘটনার দিন রাতেই ফয়েজ বাবু নামের এক যুবককে আটক করে। তিনি উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের কাজী সরোয়ারের ছেলে।