ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে অপহরণের শিকার কিশোর কারাগারে

বেলায়েত হোসেন বাবু, রংপুর

রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর এলাকার মোঃ সাইফুল ইসলাম এর পুত্র আহসান হাবীব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার রোল নাম্বার ৬৬০৫৮৪ ইউনিট সি গ্রুপ ৩ এ ভর্তির জন্য গত ১৭ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মা রেহেনা বেগমকে নিয়ে ভর্তি হতে আসে এবং ভর্তির সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে নিচে নামতেই স্যার জগদীস চন্দ্র বসু বিজ্ঞান ভবনের সামনে থেকে সাকোয়ান সিদ্দিক@প্রাঙ্গন (২২)(অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ রাঃবিঃ)মুশফিক তাহমিদ তন্ময় (২৪) পিতা মোঃ আমিনুল ইসলাম সাং চাচিয়া মিরগঞ্জ থানা সুন্দরবন জেলা গাইবান্ধা মাহিবুল মমিন সনেট (২৪) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী) ও বহিরাগত রাজুসহ বেশ কয়েকজন আহসান হাবীবকে অপহরণ করে নিয়ে যায় শের-ই বাংলা আবাসিক হলের তৃতীয় তলায় এবং আটক করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি রাখে!

আহসান হাবীব এর পারিবারিক তথ্যে জানা যায়, সেখানে সদ্য ভর্তিরত আহসান হাবিবকে বিভিন্ন নির্যাতন করে প্রক্সি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে এমনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে হবে। না হলে কর্তপক্ষের কাছ থেকে বের হলেই তাকে ও তার মাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে! এ যেন এক পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অসাধু কোন সংশ্লিষ্টদের লালনকৃত সন্ত্রাসী। শুধু এখানেই শেষ নয়. বিভিন্ন মোবাইল ফোন থেকে আহসান হাবিব এর পরিবারের নিকট থেকে মুক্তিপণ দাবী করলে তার নিকট আত্মীয় খালুকে ফোনে জানানো হয়। তাদের দাবীকৃত টাকা যদি না দেয় তাহলে ভর্তি হতে আসা আহসান হাবীবকে মেরে সেফটি ট্যাংকিতে লাশ গুম করা হবে তার মাকেও। হুমকিতে আতংকিত শশুর জামাতার জীবন বাঁচাতে প্রক্সি সিন্ডিকেটের হোতাদের মুক্তিপণের দাবি কৃত টাকা দিয়ে দেন এবং জামাতাকে প্রাণে বাঁচিয়ে রাখার অনুরোধ করেন।
কুচক্রীরা এতে খুশি না হয়ে আহসান হাবিবের অসুস্থ বাবার নিকট আবারও তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে তার বাবা তাৎক্ষণিক বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এদিকে তার মা ছোটাছুটি করতে থাকেন ছেলে ভর্তি হতে গেল এখনো আসলো না কেন? পরে ফোনে জানতে পারেন তার ছেলেকে অপহরণ করেছে একটি চক্র! তার মা তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান। সরজমিনে বিভিন্ন অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়,এই কুচক্রী মহল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অপহরণ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত তাদের নামে একাধিক অভিযোগ থাকলেও (বড় দাদাদের ভয়ে) বিশ্ববিদ্যালয়

কর্তৃপক্ষের অসাধুরা কৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউ বা কাহারা অপহরণকারীদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে প্রফেসর মোঃ আব্দুস সালাম রেজিস্টার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী, বাদী হয়ে অফিসার ইনচার্জ, মতিহার থানা আর এমপি রাজশাহী বরাবর যে এজাহার দায়ের করেছেন সেখানে অপহরণকারীদের নাম ও ডিপার্টমেন্ট ব্যবহার করা হলেও অপহরণকারীর গ্রাম,বাবার নাম অজ্ঞাত রেখেছেন এ যেন এক কল্প কাহিনী! কর্তৃপক্ষ অপহরণকারীদের সহ অপহরণকৃত আহসান হাবীবকে উর্ধতন কতৃপক্ষের অফিস কক্ষে একই সঙ্গে হাজির করেছিলো কিন্তু পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় নবাগত ভর্তি শিক্ষার্থী আহসান হাবিবকে, কিন্তু অপহরণকারীরা?.মতিহার থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ রুহুল আমিন এক প্রশ্নের জবাবে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত এলাকা প্রবেশ অধিকার সংরক্ষিত আর মামলাটি তদন্তের দায়িত্বভার গোয়েন্দা শাখা আর এমপি রাজশাহীকে দেয়া হয়েছে।

আমরা বিজ্ঞ আদালতের নিকট আসামী প্রেরণ করেছি মাত্র তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তদন্ত করে নেয়া হবে।
অনুসন্ধানে ছুটে চল্লাম আর এমপি ডিবি অফিসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সুমন কুমার সাহার সাথে অসংখ্য বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে ডিবি ওসি আব্দুস সালাম এক প্রশ্নের জবাবে জানান, মামলাটি এখানে তদন্তাধীন, তদন্ত চলছে, অপহরণের সাথে জড়িতরা সংশ্লিষ্ট কাজ ইতিপূর্বেও করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। ব্যবস্থবিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আপনারা অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে কিন্তু অপহরণকারীদের ছেড়ে দিলেন কেন? অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকার পরেও কিভাবে তারা সংবাদ সম্মেলন এবং বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন ?

 

এজাহার এত ত্রুটিযুক্ত? জবাবে ডিবি ওসি বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান আমরা অনেক কিছুই করতে পারিনা! তবে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রকৃত দেহকের প্রশ্ন ছিল যা তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনুসন্ধানী টিম প্রথমেই আমরা ড.প্রফেসর মোঃ আসাবুল হক প্রক্টর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্যারের কক্ষে গিয়ে বসলে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি আসেন. এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর সাহেব মিডিয়া বন্ধ করে রাখতে বলেন এবং তিনি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বলেন, কিন্তু তিনি মিডিয়ার কাছে সাক্ষাত দিতে আপত্তি করে বলেন, তাদের পরিচিত সাংবাদিক ছাড়া কথা বলা যাবেনা! আমরা মিডিয়া কর্মীরা অবাক! তিনি এটা কি বলতে? রহস্যের বেড়াজালে যেন সব বাঁধা এটাই যেন এক ধাঁধা! সবার প্রশ্ন রয়ে গেলো অপহরণের নৈপথ্যে কে বা কারা? আহসান হাবীব এর মা সংবাদ কর্মীদের বলেন,যারা আমার ছেলেকে অপহরণ করল তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হলো আর আমার ছেলেকে কারাগারে? সকল ধাপ শেষ ভর্তির সময়ে প্রক্সি ইস্যু? কর্তৃপক্ষ কি অপহরণকারীদের কাছে জিম্মি? ভর্তি হতে আসা আহসান হাবীব কিভাবে প্রক্সি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হলো? অপহরণকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছেড়ে দিলো কেন? জানতে চাই দেশবাসী আহসান হাবীবের শিক্ষা জীবন ভিক্ষা চান তার মা কর্তৃপক্ষ ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে!

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪