মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায় ডিবি পরিচয়ে অপহরণের সাত-দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সন্ধান মেলেনি মো. রাশেদ মিয়া (৪০) নামের এক কৃষকের। মুক্তাগাছা উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের বিন্নাকুড়ি এলাকায় বুধবার (২৭ মার্চ ২০২৪) দিবাগত রাত ১ টার দিকে রাশেদকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা হাইচ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় একদল ভূয়া ডিবি লোকজন।
ভূক্তভোগী পরিবার সিএনএন বাংলা২৪ কে জানান, সারাদিন কৃষি কাজ শেষে বুধবার (২৭ মার্চ) বিকালে সংসারের বাজার করে রাতে বাড়িতে ফিরেন এবং রাতের খাবার শেষে স্ত্রী ও চার কণ্যাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন রাশেদ। হঠাৎ মধ্য রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি সাদা রঙের হাইচ যার নাম্বার (ঢাকা মেট্রো- ০৩৪২৬৩) গাড়িতে উঠিয়ে তাকে নিয়ে যায়। পরের দিন থেকে থানা পুলিশ সব খানে খোঁজা খুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি পরিবারের লোকজন।
এ প্রসঙ্গে নিখোঁজ রাশেদের স্ত্রী শাপলা খাতুন বলেন, ‘মধ্য রাতে ১০-১৫ জন লোক ডিবি পরিচয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে এবং তার হাতে হাতকড়া লাগিয়ে হাইচে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যাইনি।’
অপহৃত রাশেদের ভাই বাশেদ আলী বলেন, ২০২০ এভাবেই আগে একবার আমাদের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়েগিয়েছিল র্যাব। এবার মাঝরাতে ভাইকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি পুলিশ। স্থানীয় তিনজন যুবক পুলিশের সোর্স পরিচয়ে পুলিশ দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। তাদের হয়রানির শিকার হয়েছেন এলাকার ১৫ টি পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা বকুল মাস্টার বলেন, ‘স্থানীয় কিছু মানুষ পুলিশের সঙ্গে শখ্যতা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। ওই সকল মানুষের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করলেই সব রহস্য বেরিয়ে আসবে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই ঝামেলায় পড়া তাই কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।’
স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ৩ জন মানুষ এলাকায় এসব কাজ করছেন। তারা তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী পুলিশ দিয়ে লোকজন ধরিয়ে দেয় এবং টাকা নিয়ে ছাড়িয়েও দেয়। না হলে মামলা দেয়।
স্থানীয় ভুক্তভোগেীদের কাছে ওই ৩ জন ব্যক্তির নাম জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘তাদের নাম বললে এলাকা ছাড়া হতে হবে। মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফারুক আহমেদ জানান, এবিষয়ে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। তবুও বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে।
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফারুক হোসেন জানান, ডিবি থেকে ওইদিন মুক্তাগাছায় কোন অভিযান হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।