নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাভার থেকে: আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। দিবসটিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে গোটা জাতি।
প্রতি বছরের মতো দিনটির প্রথম প্রহরে রাষ্টপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর উন্মুক্ত করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক। সকালের দিকে মানুষের উপস্থিত কম থাকলেও দুপুরের আগে বাড়তে থাকে মানুষের চাপ। যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে বাঙালি জাতি, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নামতে শুরু করেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে।
২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি জাতির ওপর হায়েনার মতো হামলা চালিয়ে গ্রেপ্তার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গ্রেপ্তারের আগেই তিনি তার বার্তায় স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আর আজকের এই দিনে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করা হয়। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীনতা লাভ করে জাতি। এরপর থেকেই আজকের এই দিনটি উদযাপন করা হয় স্বাধীনতা দিবস হিসেবে। এই দিনে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের শ্রদ্ধা জানাতে দুপুরের আগ মুহূর্তে জাতীয় স্মৃতিসৌধে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন আহসান মিয়া। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি সেহরি খেয়ে শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্য রওনা হই। সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে স্মৃতিসৌধে আসি। এখানে এসে দেখি দলে দলে অসংখ্য মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসছে। দেখে আমার ভালোই লাগলো। আমি এর আগে কখনও আসিনি। এখানে এসে গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। আমি সকাল ৮টার দিকে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
আশুলিয়ার জামগড়া এলাকা থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন পোশাক শ্রমিক আব্দুল আউয়াল। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি প্রতিটা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর সেনাদের শ্রদ্ধা জানাতে আসি। এবার আমার স্ত্রী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। এসে দেখি মানুষের ঢল নেমেছে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ তার সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আজকে আমার সহযোদ্ধাদের সম্মান দেখে মনে হচ্ছে আমরা জীবন বাজি রেখে যে যুদ্ধ করেছি তা সার্থক। যদিও আমরা স্বাধীনতার পরই সার্থকতা পেয়েছি। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মসহ বাংলাদেশ সরকার যে প্রাধান্য আমাদের দিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই চাওয়ার চেয়ে বেশি। আমার শহীদ ভাইদের যে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে তা হয়তো তারা দেখছেন না, কিন্তু তাদের হয়ে আমি যা অনুধাবন করতে পারছি তা যদি শহীদ ভাইদের কাছে পৌঁছে দিতে পারতাম তাহলে আরও শান্তি পেতাম।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এরপর সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক। এর পরপরই নামে গণমানুষের ঢল। পুরো সৌধ এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।