ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ খেলাপি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 

সদ্যসমাপ্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এই খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ।

খেলাপি ঋণের এই পরিমাণ গত ২০২২ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

 

তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। যা তার আগের প্রান্তিকের চেয়ে ৯ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা কমেছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। যা তখন বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

 

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০২৩ সালের জুন প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণ ঋণের যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০২২ সালের জুন প্রান্তিকটিতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছিল খেলাপি ঋণ। এরপর সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। যা তখন বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সবশেষ ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আরও কিছুটা কমে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় নেমেছে। এই খেলাপি ঋণ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ। সে হিসাবে ৬ মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ ১০ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা কমেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা। তবে ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

 

অপরদিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

 

আইএমএফের শর্ত মতে, পুনঃতফশিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখাতে হবে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটির হিসেবে খেলাপি দাঁড়াবে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি।