সেলিম উদ্দিন
ত্রিমুখি সংকটে পড়েছে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার সদর ঈদগাঁও-জালালাবাদ-পোকখালীর বাসিন্দারা। রোববার দুপুরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ঈদগাঁওর ফুলেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপদ সীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে করে ইসলামাবাদের কবি নুরুল হুদা সড়কের গার্লস্কুল সংলগ্ন স্থান চরম ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
একই দিনে ঈদগাঁও -গোমাতলী সংযোগ সেতুর পাশে কাঠের সেতুটিও ভেঙ্গে গেলে নদীও পার হতে পারছে না সাধারন মানুষ। জালালাবাদে রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে লোকজন এক প্রকার পানিবন্দী জীবনযাপন করছে। ভাঙা সড়ক ও তলিয়ে যাওয়া ব্রিজের কারণে যানবাহন নিয়ে কোথাও বের হতে না পারায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে এসব ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিনদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জেলার বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারের অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ঈদগাঁও-গোমাতলীর কাঠের ব্রিজ। সেখানে বর্তমানে কর্মমুখী লোকজন নদী পারাপার করছেন নৌকাযোগে।
পোকখালি ইউনিয়নের মধ্যম পোকখালি, নাইক্যংদিয়া গ্রামের শতশত বসতবাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নদীর বাঁধ ভেঙে এখানকার হাজারো বাড়িঘর এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। এছাড়া পোকখালি ইউনিয়ন পরিষদ ও মুসলিম বাজারের ব্যবসায়ীরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ভাঙন এলাকা পরিদর্শনকালে প্রত্যাক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঈদগাঁও বাজারের বাশঁঘাটা সড়ক, কাপড়ের গলি, তরকারি বাজারের অর্ধশতাধিক দোকান কার্যত পানিবন্দী। এতে মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিপুল পরিমাণে।
এদিকে, জালালাবাদ ইউনিয়নের লোকজন চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে ভাঙনের ফলে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি এবং দোকানপাট, বসতঘর তলিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন বালির বস্তা দিয়ে তড়িৎ গতিতে কোনোরকমে ঠেকিয়েছে ঢলের পানি। দ্রত সময়ে যদি ভাঙন অংশ সংস্কার করা না হয় তাহলে আরো ব্যাপক আকারে ভাঙনের আশংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
অপরদিকে ঈদগাহ হাইস্কুলে হাঁটু পরিমাণ পানিতে সয়লাব হয়েছে। সে সাথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব শিক্ষাঙ্গনে আসা যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়ছে।
জানা যায়, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নিচতলার প্রতিটি শ্রেনীকক্ষে পানি প্রবেশ করেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ঈদগাঁওর জাগির পাড়া, জালালাবাদের সওদাগরপাড়ায় বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে একাকার হয়ে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ছে।
জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ জানান, তার এলাকায় বেশকটি ভাঙন হয়েছে। দ্রতগতিতে সংস্কার করা না হলে এটি আরো বড় আকারে হতে পারে বলে জানান।